উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর, সুতি, সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান সহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকা। এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি জন। বহু মানুষ প্রাণ বাঁচাতে আতঙ্কে ঘরছাড়া হয়েছেন। বহু মানুষ নদীপথে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন মালদা জেলার বৈষ্ণবনগরে। পাঁচ শতাধিক মানুষ আশ্রয় নেন পারলালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। বেশ কয়েকদিন সেখানে থাকার পর আতঙ্ককে সঙ্গে নিয়ে ঘরে ফিরলেন দুর্গতরা। রবিবার বিকেলে প্রশাসনের সহায়তায় তাঁরা ফিরে যান নিজ ঘরে।
মুখে চোখে ভয়ের ছাপ। মনে আতঙ্ক। আর এই নিয়েই ঘরে ফিরলেন মুর্শিদাবাদের ওয়াকফ হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত ধুলিয়ানের বাসিন্দারা। মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তাদের মালদার পারলালপুর ক্যাম্প থেকে ফেরানো হয় মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে। ৯ দিন আগে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয় মুর্শিদাবাদ জেলার বেশ কয়েকটি এলাকা। ভয়াবহ হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত, ধুলিয়ানের বাসিন্দারা রাতের অন্ধকারে গঙ্গা নদী পার করে আশ্রয় নিয়েছিলেন মালদার বৈষ্ণবনগরের পারলালপুরে। পারলালপুর হাইস্কুলে শিবির করে ছিলেন তারা। এই পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে পুলিশি প্রহরায় নিজ এলাকায় দুর্গতদের ফেরানোর কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন। বহু মানুষ আতঙ্কে এলাকায় ফিরতে অস্বীকার করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় নিশ্চিত নিরাপত্তার। এরপরেই রবিবার বিকেলে মালদা ও জঙ্গিপুর জেলা পুলিশ এসকোর্ট করে প্রত্যেক স্কুলে আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক ঘরছাড়াকে ধুলিয়ানের উপদ্রুত এলাকায় ফেরানো হয়। প্রশাসন আশ্বাস দিলেও ঘরছাড়ারা তাতে ভরসা করতে পারছেন না। তাও এভাবেই একপ্রকার প্রাণ হাতে নিয়েই তাঁদের ফিরতে হচ্ছে নিজের বাড়িতে।
জানা গিয়েছে, এদিন মালদা ও জঙ্গিপুর পুলিশের একটি টিম এসকোর্ট করে এলাকায় ফিরিয়ে দেন ঘরছাড়া দুর্গতদের। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেন, মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকা সামশেরগঞ্জ ও সুতির পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। যে কোনও প্রকারের অশান্তি ঠেকাতে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে পুলিশ। শনিবার পর্যন্ত মোট ১৩৮টি মামলা রুজু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত অশান্তির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ২৮৯ জনকে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে। ঘরছাড়া প্রায় ১০০টি পরিবার নিজেদের বাড়িতে ফিরে গিয়েছে। এখনও যারা ঘরে ফেরেনি, তাঁদের পুলিশি প্রহরায় নিজেদের বাড়িতে ফেরাতে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি জারি রয়েছে। জাফরাবাদ এবং আশপাশের এলাকায় তিনটি পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে।
এদিন মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয় বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া পাঁচ শতাধিক মানুষকে নিজেদের বাড়িতে ফেরানোর। নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেকেই নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে অস্বীকার করেন। প্রশাসনের তরফে দুর্গতদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে পুলিশি প্রহরায় শিবির ছেড়ে ফিরে যান নিজ নিজ এলাকায়।