উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ জরুরি অবস্থার সময় সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘অখণ্ডতা’ শব্দগুলি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করলেন উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। এটিকে তিনি ‘ন্যায়বিচারের প্রতি বিদ্রূপ’ এবং ‘সনাতনের চেতনার প্রতি অবজ্ঞা’ বলেও অভিহিত করেন।
শনিবার দিল্লিতে এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন ধনখড়। ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় কোনওরকমের রদবদল করা যায় না বলেও এদিন জানান তিনি। এরপরেই তিনি বলেন, “প্রস্তাবনা পরিবর্তনযোগ্য নয়। এটিই সেই মূল যার উপর ভিত্তি করে সংবিধান গড়ে উঠেছে। প্রস্তাবনা হল সংবিধানের বীজ। এটিই সংবিধানের আত্মা।” এরপরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘কিন্তু আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনা জরুরি অবস্থার সময়, অর্থাৎ ১৯৭৬ সালের ৪২তম সংবিধান(সংশোধনী) আইন দ্বারা পরিবর্তন করা হয়েছিল।‘সমাজতান্ত্রিক’, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘অখণ্ডতা’ শব্দগুলি যুক্ত করা হয়েছিল। আমাদের অবশ্যই এই বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।’’
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই একই রকম কথা শোনা গিয়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলের গলাতেও। তিনি দাবি করেছিলেন, জরুরি অবস্থার সময় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার অসাংবিধানিক ভাবে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি যোগ করেছিল। তাই ওই দুই শব্দ বাদ দেওয়া প্রয়োজন। তিনি প্রশ্নের সুরে বলেছিলেন, ‘‘জরুরি অবস্থার সময় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল কংগ্রেস। সে সময় সংবিধানের প্রস্তাবনায় যে শব্দ যুক্ত করা হয়েছিল, তা কি আর বহাল রাখা উচিত!’’
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন ইন্দিরা গান্ধির নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। ওই সময়কালকে ‘ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্ধকারতম অধ্যায়’ বলেও অভিহিত করেছিলেন হোসাবলে। সেই আবহেই এবারে দেশের উপ-রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।