জয়পুর: নিঃসন্দেহে স্মরণীয় অভিষেক। ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু। আর আউট হওয়ার পর বাইশগজ ভিজল তারই চোখের জলে।
আইপিএল অভিষেকে প্রথম বলে ছয় মারার নজির অনেক রয়েছে। তবে বৈভব সূর্যবংশীর বয়স সবে ১৪। সেখানেই তার কৃতিত্ব। বিহার থেকে উঠে আসা বৈভবই এখন আইপিএলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার। শনিবার লখনউ সুপার জায়েন্টসের বিরুদ্ধে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসাবে ওপেন করতে নামে বৈভব। প্রথম বলেই যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ছক্কা হাঁকাল, কে বলবে আইপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছে কৈশোরে পা দেওয়া বৈভব। দিনের শেষে রাজস্থান জিততে পারেনি। বৈভব অর্ধশতরানও ছুঁতে পারেনি। ২০ বলে ৩৪ রান করে ফিরতে হয়। তবুও তার নামই চর্চায়। ক্রিকেট দুনিয়া ছাড়িয়ে এখন বৈভবের উপস্থিতি বিশ্বের দরবারে।
কৈশোরের সারল্য তার চোখে-মুখে জ্বলজ্বল করছে। যে বয়সে বাকিরা প্রিয় খাবার বাছতে শেখে, সেই বয়সে পছন্দের পিৎজা, খাসির মাংস ছাড়তে হয়েছে। পরিবর্তে বৈভব বেছে নিয়েছে ক্রিকেটকে। সেই স্বাদই তার কাছে সেরা। বিহার থেকে উঠে আসা ক্রিকেটারের কোচ মণীশ ওঝা বলেছেন, ‘খাসির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে বৈভব। প্রিয় পিৎজাও এখন আর ওর খাদ্যতালিকায় নেই। ওগুলো ওর পছন্দের খাবার ছিল। আসলে বয়সটা খুব কম তো।’ মণীশ মনে করছেন লম্বা রেসের ঘোড়া হতে পারে বৈভব। বলেছেন, ‘ও খুব সাহসী ব্যাটার। রাহুল দ্রাবিড় স্যর আগেই জানিয়ে দেন লখনউ ম্যাচে ওর অভিষেক হবে। শুক্রবার অনুশীলনের পরই বৈভব আমাকে তা জানায়। আমি ঠান্ডা মাথায় খেলার পরামর্শ দিই। ও বলেছিল, সুযোগ পেলেই ছয় মারবে।’ সেই সুযোগ বৈভবের সামনে চলে আসে প্রথম বলেই। সঙ্গে বলেছেন, ‘ওর বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। সেখান থেকে পাটনার দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার। তা অতিক্রম করে অনুশীলনে আসত। তারপর কঠোর পরিশ্রম। এটাই ওকে অনেকদূর নিয়ে যাবে।’
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার স্যাম বিলিংস সেরা সময়ের যুবরাজের সঙ্গে তুলনা করেছেন বৈভব সূর্যবংশীকে। মণীশও তাঁর সঙ্গে সহমত। বলেছেন, ‘ওর মধ্যে যুবরাজ সিংয়ের মতো আগ্রাসী মনোভাব রয়েছে। সাহসীও। তবে রাহুল দ্রাবিড় ওর চোখে ভগবান। তবে ও খুব আবেগপ্রবণও।’ সেজন্যই বোধহয় আউট হওয়ার পর চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। বৈভবের খেলা দেখে মুগ্ধ গুগল সিইও সুন্দর পিচাইও। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘আইপিএলে অষ্টম শ্রেণির এক কিশোরের খেলা দেখব বলে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। কী দুর্দান্ত অভিষেক।’