উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকা থেকে অবৈধ অভিবাসীদের (Unlawful Immigrants) ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। এখনও পর্যন্ত প্রথম দফায় ১০৪ জন, গত শনিবার দ্বিতীয় দফায় ১১৬ জন এবং রবিবার তৃতীয় দফায় ১১২ জন ‘অবৈধ’ ভারতীয় অভিবাসীকে ফিরিয়ে দিয়েছে আমেরিকা। এর আগে বিতাড়িতদের অনেকেই দাবি করেছিলেন যে তাঁদের হাতে হাতকড়া ও পায়ে শিকল বেঁধে বিমানে করে নিয়ে আসা হয়েছে। যা নিয়ে অনেকের নানা মন্তব্যও উঠে এসেছিল। এবার রবিবার যারা ফেরত এসেছেন তাঁদের মধ্যেই একজন শিখ তরুণ আমেরিকায় বন্দিশিবিরে (US detention camp) থাকাকালীন নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, সঠিকভাবে খাবার মেলেনি অনেকদিন। এমনকি জোর করে তাঁর মাথা থেকে পাগড়ি (Turban) খুলে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয় বলেও জানান ওই তরুণ।
পঞ্জাবের অমৃতসরের বাসিন্দা যতিন্দর সিং (২৩)। কর্মসংস্থানের আশায় আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গত বছরের ২৭ নভেম্বর মার্কিন সীমান্তে ধরা পড়ে যান। এরপর দুই সপ্তাহের জন্য তাঁকে বন্দিশিবিরে রাখা হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, সেখানে থাকাকালীন অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁকে মাথার পাগড়ি খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়। তাঁকে বলা হয়েছিল, এটাই সেখানকার নিয়ম এবং এরপরই পাগড়িটি ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়। তিনি আরও দাবি করেছেন যে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হত না কাউকে। দিনে দু’বার খালি চিপস এবং ফলের রস খেতে দেওয়া হত।
৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এজেন্টের মাধ্যমেই আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন যতিন্দর। কিন্তু বাকি ভারতীয় অভিবাসীদের মতো প্রতারিত হয়েছেন তিনিও। ওই তরুণ জানিয়েছেন, পানামার জঙ্গল পার হতে তিনদিন সময় লেগেছিল। তাঁর আগেই এজেন্ট প্রতারণা করে পালিয়ে যায়। এরপর মার্কিন সীমান্ত পার হতেই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। আর এবারও ৩৬ ঘণ্টার বিমানযাত্রায় হাত-পা শিকল দিয়ে বাঁধা ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। বিমান অবতরণের ঠিক ১০ মিনিট আগে সেই শিকল খুলে দেওয়া হয়।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ঘটনার নিন্দা করেছে বিভিন্ন শিখ সংগঠনগুলি। পাগড়ি খুলে ফেলার ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির (এসজিপিসি) প্রধান হরজিন্দর সিং ধামি। আমেরিকা তিন দফায় এখনও পর্যন্ত মোট ৩৩২ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে।