দিনহাটা: মহারাষ্ট্র, দিল্লির পর এবার পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় জল মেশাতে চাইছে বিজেপি। ওরা যদি জল মেশায় তাহলে ওদের হাঁটুতেও জল ভরে দেওয়া হবে। অন্যদিকে এই কাজে যদি কোনও সরকারি আধিকারিক যুক্ত থাকে তাহলে তাদেরও সূর্য দেখা বন্ধ হয়ে যাবে। রবিবার দুপুরে দিনহাটা সংহতি ময়দানে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে তৃণমূলের জনসভা থেকে এভাবেই বিরোধী ও সরকারি কর্মচারীদের হুঁশিয়ারি দিলেন উওরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। এদিনের প্রতিবাদ সভায় উদয়ন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্র নাথ বর্মন, সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তবে এদিনের সভায় গোষ্ঠী কোন্দলের পুরোনো ছবির পরিবর্তে আগামি বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে বিজেপির বিরুদ্ধেই সরব হতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। এদিন অধিকাংশ বক্তারাই তাদের বক্তব্যে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে উদয়ন প্রথমেই জানান, কেন্দ্রীয় বাজেটে বিহার, আসাম পেলেও বাংলার ভাগ্যে প্রাপ্তির ভাড়ার ছিলো শূন্য। আসলে বিজেপি বাংলা বিরোধী, বাঙালী বিরোধী। তাইতো এই রাজ্য ক্ষমতায় আসতে না পেয়ে ভাতে মারার চেষ্টা করছে বাঙালীদের। তবে মুখ্যমন্ত্রী নিজের টাকায় বাংলার মানুষের প্রাপ্য ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে এরই মাঝে উদয়নের তোপ, মহারাষ্ট্র, দিল্লির পর বিজেপি বাংলাতেও ভোটার তালিকায় জল মেশাতে চাইছে। যদি ভোটার তালিকায় জল মেশে তাহলে আমাদের কর্মীদের বলবো তাদের হাঁটুতেও যেনো জল ধরিয়ে দেয়। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, ‘জানতে পারছি এর সঙ্গে অনেক সরকারি আধিকারিক যুক্ত আছেন। যদি তা প্রমাণিত হয় তাহলে তাদেরও সূর্য দেখা বন্ধ হয়ে যাবে। ’
সিপিআইএমের কর্মচারী সংগঠন কো অর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক আবু বক্কর শেখের কথায়, ‘কেউ কিছু বলতেই পারেন। তবে এর সঙ্গে সরকারি কর্মচারীরা কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। কেন না তারা নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনেই কাজ করেন। তাই এই কাজ যারা করেন তারা সরকারি কর্মচারী নন বরং অন্য কোনো বড়ো মাথা, যাদের পেছনে অদৃশ্য ক্ষমতাশালীর হাত রয়েছে।’
তবে মন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন তৃণমূলের কর্মচারী সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সম্পাদক উওম রায়। তাঁর কথায়, যদি সত্যিই কেউ এরকম অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে অবশ্যই শাস্তি পাওয়া দরকার। এনিয়ে আমি মন্ত্রীর সঙ্গে একমত।
এদিনের প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান গিরীন্দ্র নাথ বর্মনও বিজেপিকে একহাত নেন। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র শুধু বাংলা থেকে নেয়, কিছুই দেয় না। তাই আমাদের ব্যালটে এর জবাব দিতে হবে। সাংসদ জগদীশের গলাতেও একই সুর শোনা যায়। এবং এদিন তিনি দিনহাটা বিধানসভার এলাকা ধরে ধরে তৃণমূল নেতৃত্বকে দলকে শক্তিশালী করার বার্তা দেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক তাঁর বক্তব্যে প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে একহাত নেন।