গৌরহরি দাস, কোচবিহার : দিনহাটায় বিজেপিকে তিরঙ্গা যাত্রা করতে দেওয়া হবে না, কার্যত এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। শনিবার কোচবিহারের রবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠিত তৃণমূলের কর্মীসভায় ওই মন্তব্য করেন উদয়ন। তাঁর মন্তব্যে শোরগোল পড়েছে জেলার রাজনীতিতে। যদিও মন্ত্রীর মন্তব্যে পাত্তা দিতে নারাজ দিনহাটার বিজেপি নেতারা। তিরঙ্গা যাত্রা আটকাতে এলে বিজেপিও যে ছেড়ে কথা বলবে না, তা স্পষ্ট জানিয়েছেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু। তাঁর বক্তব্য, ‘দিনহাটা কি উদয়ন গুহের পৈতৃক জমি? সেদিন দিনহাটায় সাধারণ মানুষ পথে নামবে। উনি তা আটকানোর চেষ্টা করলে মানুষই তার জবাব দেবে। বিজেপিও ছেড়ে কথা বলবে না।’
২৫ জুন দিনহাটায় তিরঙ্গা যাত্রার ডাক দিয়েছে পদ্ম শিবির। কর্মসূচি যাতে বিজেপি কোনওভাবে সফল করতে না পারে, দলীয় কর্মীদের সেই নির্দেশ দিয়েছেন উদয়ন। মন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি দিনহাটায় এখন মোটামুটি ঘরের ভেতরে রয়েছে। বাইরে তাদের দেখা যায় না। তবে ঘরে আছে, একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। ২৫ জুন ওরা তিরঙ্গা যাত্রা করে জমায়েতের পরিকল্পনা নিয়েছে। দলকে অক্সিজেন জোগানোর চেষ্টা করছে। আমি দলের কর্মীদের বলব, কোনওভাবেই বিজেপির কর্মসূচি সফল হতে দেওয়া যাবে না।’ তিরঙ্গা যাত্রায় সাধারণ মানুষ বা বিজেপির নীচুতলার কর্মীরা যাতে উপস্থিত হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপের জন্য ঘাসফুল নেতাদের নিদান দিয়েছেন দিনহাটার বিধায়ক।
তাঁর কথায়, ‘গত লোকসভা নির্বাচনে দিনহাটা থেকে আমরা একটা ঘূর্ণিঝড় তৈরি করেছিলাম, যাতে জেলায় বিজেপি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। বিধানসভাতেও ভালো ফলের জন্য দিনহাটা থেকেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি করতে হবে। যেটা হবে ওদের তিরঙ্গা যাত্রার দিনই।’
লোকসভা ভোটে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী লাগামছাড়া সন্ত্রাস চালিয়েছে। যে কারণে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ‘ঘূর্ণিঝড়’ শব্দের ব্যবহারে কার্যত এদিন সেই ইঙ্গিতই দিলেন মন্ত্রী, মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ঘূর্ণিঝড় প্রসঙ্গে মন্ত্রীকে পালটা দিয়েছেন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু। তাঁর কথায়, ‘গত লোকসভায় লাগামছাড়া সন্ত্রাসের কারণে আমজনতা ভোট দিতে পারেনি। সন্ত্রাসের বাতাবরণে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। এবার তৃণমূল সেই পথে পা বাড়ালে ভুল করবে।’ এই আবহে দিনহাটায় বিজেপির তিরঙ্গা যাত্রা কতটা সফল হয়, এখন সেদিকেই নজর সকলের।