উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রাত পোহালেই একদিকে তৃণমূলের শহিদ দিবস, অন্যদিকে বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি (Tmc-Bjp)। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই তৃণমূলের শেষ শহিদ দিবস পালন। ফলে ধর্মতলার মঞ্চ থেকে প্রতিবারের মতো দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন সেদিকে সকলের নজর রয়েছে। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা যেমন লক্ষ্য রাখবেন, তেমনি নজর থাকবে বিরোধীদেরও। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও ভাল ফল করেছে তৃণমূল। তা সত্ত্বেও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে তৃণমূলের সামনে।
গত বছর অগাস্টে ঘটে গিয়েছে আরজি করের ঘটনা। যার নৃশংসতা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে সারা দেশে। যা তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ। যদিও আরজি কর কাণ্ডের পর উপনির্বাচনে তৃণমূলের ফলে কোনও প্রভাব পড়েনি। কিন্তু সম্প্রতি ফের কসবায় কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা ফের একবার নারী নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে। যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে তৃণমূলকে।
এরই মধ্যে ওয়াকফ বিলকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদে ঘটে যাওয়া হিংসা ও একাধিক মৃত্যুর ঘটনাও রাজ্য প্রশাসনের যথেষ্ট অস্বস্তির কারণ। এই হিংসার পেছনে সরাসরি তৃণমূল ও প্রশাসনের মদতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্বাভাবিক ভাবেই এনিয়ে বিরোধীরা তৃণমূলকে বিঁধতে কোনও কসুর করেনি। এই ইস্যুটিও বর্তমানে তৃণমূলকে সামলাতে হবে। এছাড়াও গত ১ বছরে নানা নেতাদের নানা মন্তব্যও অনেক সময় অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে দলকে। সেই অস্বস্তি ঢাকতে দলীয় নেতৃত্ব কী বার্তা দেন তাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে, বিজেপিও যে কোনও ভাবেই তৃণমূলের সামনে খোলা ময়দান ছেড়ে দেবে না তা ২১ জুলাই দলের উত্তরকন্যা অভিযানের কর্মসূচি ঘোষণা থেকেই পরিষ্কার। শুভেন্দু অধিকারির নেতৃত্বে যুব মোর্চার ব্যানারে হওয়া এই কর্মসূচি সফল করতে রবিবার থেকেই শিলিগুড়িতে চলে এসেছেন হেভিওয়েট বিজেপি নেতারা। একাধিক বিধায়ক থেকে শুরু করে সাংসদ শিলিগুড়িতে সভাস্থলে থেকে কাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখছেন। রবিবারের এই কর্মসূচিতে থাকবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি। তাই কর্মসূচীকে সবরকম ভাবে সফল করতে ঝাপিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। অন্যদিকে, যে কোনরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তৈরি থাকছে পুলিশও। জায়গায় জায়গায় বাহিনী, ‘জল কামান’ প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। উত্তরকন্যার সামনে ব্যারিকেড করে ঘিরে দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত জানিয়েছেন, উত্তরের বঞ্চনা এবং নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁরা কড়া প্রতিবাদ গড়ে তুলবেন। তবে প্রথমে বিজেপির কর্মসূচির অনুমতি দিতে চায়নি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে সভার অনুমতি মেলে। হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে ১০ হাজারের বেশি জমায়েত কোনও ভাবেই করা যাবে না, মিছিলে ১০০ লোকের বেশি থাকতে পারবেন না।