Tangon River | বালি মাফিয়াদের দখলে টাঙন

Tangon River | বালি মাফিয়াদের দখলে টাঙন

শিক্ষা
Spread the love


নিউজ ব্যুরো: দুই দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে টাঙন নদীর (Tangon River) বুকে চলছে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর থেকে শুরু করে কুশমণ্ডির কালিকামড়া পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় দিনেরাতে বেআইনিভাবে চলছে বালি তোলার কাজ। মাঝেসাঝে ভূমি দপ্তরের আধিকারিকরা অভিযান চালালেও মাফিয়ারাজ পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

কালিয়াগঞ্জে টাঙন নদীর পাড়ে রাধিকাপুর অঞ্চল৷ সূর্য অস্ত গেলেই এখানে শিকারি নিশাচরের মতো রাত জাগে আলাদিন, আজিবুল, সইফুল, মজিবুর। অভিযোগ, এই বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যেই মীর্জাগরের বিষডাঙ্গা এলাকায় টাঙনের বুকে অবাধে চলছে বালি পাচার। বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা ওই অঞ্চলে টাঙন নদীর প্রায় পুরোটাই বালি মাফিয়াদের কবজায়। রাত নামলেই শুরু হয় ট্র্যাক্টর বোঝাই করে বালি পাচার। অভিযোগ, এই মাফিয়ারাজের মূল মাথা আলাদিন। তারই বদান্যতায় ফুলেফেঁপে উঠছেন অবৈধ বালি ব্যবসায়ীরা। সেই আলাদিনের ‘আশ্চর্য প্রদীপ’-এর জাদুতে নাকি পুলিশ ও ব্লক প্রশাসন চুপ হয়ে থাকে। এমনকি শাসক ও বিরোধী দলের স্থানীয় নেতারাও এক ঘাটে জল খান তারই অঙ্গুলিহেলনে।

বিজেপির স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অরুণ বর্মনের অভিযোগ, ‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই চোরাগোপ্তা পথে ট্র্যাক্টর বোঝাই করে বালি তুলছে। শুধু রাতে নয়, দিনেও  চলছে এই কারবার। প্রশাসনকে বলে কোনও লাভ নেই।’

কালিয়াগঞ্জ ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিতাই বৈশ্য আবার পালটা দায় চাপিয়েছেন বিজেপির ঘাড়ে। তাঁর বক্তব্য, ‘স্থানীয় বিজেপি মেম্বারের অঙ্গুলিহেলনেই বিষডাঙ্গা এলাকায় অবৈধ ভাবে টাঙন নদী থেকে বালি তোলা হচ্ছে।’

কালিয়াগঞ্জ ব্লক ভূমি দপ্তরের আধিকারিক অমিতাভ মিশ্র অবশ্য দ্রুত কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বংশীহারী ও কুশমণ্ডিতে টাঙন নদীর একাধিক ঘাটে অভিযান চালিয়ে নদীর পাড়ে বেআইনিভাবে মজুত করে রাখা একাধিক বালির স্তূপ বাজেয়াপ্ত করেন তাঁরা।

বংশীহারী ব্লকে টাঙন নদীর বেশ কয়েকটি ঘাটে অবাধে বালি তুলে মজুত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছিল। এই বেআইনি কারবারে নাম জড়ায় তৃণমূল পরিচালিত এলাহাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের। সেই খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে ভূমি দপ্তর। সোমবার বিকেলে ডাম্পার ও আর্থ মুভার নিয়ে অভিযানে নামেন গঙ্গারামপুর মহকুমা ভূমি আধিকারিক নরবু ইয়োলম ও বংশীহারী ব্লক ভূমি দপ্তরের আধিকারিক মলয় চক্রবর্তী। কুশমণ্ডির কালিকামড়া ও বংশীহারীর জোরদিঘি শীতলা মন্দির সংলগ্ন এলাকায় টাঙন নদীর ঘাটে গিয়ে তাঁরা পৌঁছালে এলাকার বালি ব্যবসায়ীরা এসে কথা বলেন। কিন্তু মজুত করা বালির বৈধ চালান দেখাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। আধিকারিকরা চালান দেখতে চাইলে ওই ব্যবসায়ীরা যে কাগজ দেখান, সেটি আদতে মেটেরিয়াল ট্রান্সপোর্ট-এর অনুমতিপত্র। সরেজমিন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর সমস্ত বালি বাজেয়াপ্ত করেন ভূমি আধিকারিকরা।

গঙ্গারামপুর মহকুমা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক নরবু ইয়লোম বলেন, ‘বংশীহারী ও কালিকামোড়া থেকে অবৈধ বালির স্টক সিজ করা হয়েছে। তাঁদের কাছে যে কাগজ আছে তা কেবল ট্রান্সপোর্ট-এর অনুমতিপত্র। বালি তোলার কোনও অনুমতি নেই। অবৈধভাবেই নদী থেকে বালি তুলে মজুত করা হচ্ছিল।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *