উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ মেটায়নি রাজ্য সরকার। শীর্ষ আদালত ২৭ জুনের মধ্যে ডিএ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যকে। সরকারের বক্তব্য, এখনও বকেয়া ডিএ বাবদ কত টাকা দিতে হবে তা তো হিসাব করা হয়নি। এ জন্য অন্তত দু’মাস সময় লাগবে। অথচ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। মঙ্গলবার রাজ্যের এই সওয়াল শুনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা তাঁদের পর্যবেক্ষণে বলেন, হিসাব করে বকেয়া ডিএর ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে বলুন রাজ্য সরকারকে।
এদিন ডিএ মামলায় রাজ্যের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল ও শ্যাম দিওয়ান। কপিল তাঁর সওয়ালে বলেন, “আমাদের তো টাকার অভাব। তা ছাড়া রাজ্য সরকার তো ইচ্ছামতো আর্থিক ঘাটতি বাড়াতে পারে না। এত টাকার জন্য তো রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নিতে হবে। যা সহজ ব্যাপার নয়। ধার করলে আবার বিধানসভা থেকে পাশ করাতে হবে।”
কপিল আরও বলেন, “১০০ দিনের কাজ সহ অন্যান্য প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকারকে খরচ করতে হচ্ছে। ফলে রাজ্য সরকার বাড়তি টাকা কোথা থেকে পাবে। আদালত এটা বলতে পারে না যে উপভোক্তা মূল্যসূচক অনুযায়ী রাজ্য সরকারকে ডিএ দিতেই হবে। এটা চাপিয়ে দেওয়া যায় না।”
কপিলের বক্তব্যের পর সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও প্রশান্ত কুমার মিশ্র তাঁদের পর্যবেক্ষণে বলেন, “রাজ্য সরকারকে যে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে বলা হয়েছিল, তার কী হল? জবাব কপিল বলেন, ২৫ শতাংশ মানে কত টাকা সেটা তো হিসাব কষে বের করতে হবে। যা শুনে আদালত বলে, কিছু একটা সঙ্গত অঙ্ক স্থির করে ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে বলুন রাজ্য সরকারকে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা তো আপনাদেরই লোক, আপনাদের হয়েই কাজ করে।
এদিনের শুনানিতে মূলত রাজ্য সরকারের বক্তব্য শোনে সর্বোচ্চ আদালত। সরকারের তরফে আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান তাঁর সওয়ালে বলেন, “মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার নয়, তাই ডিএ দেওয়ার বিষয়ে কোনও আইনি বাধ্যবাধকতাও নেই।”
তিনি বলেন, “এমন নয় যে রাজ্য সরকার ডিএ দিতে চায় না। তবে রাজ্যের আর্থিক ক্ষমতা কতটা সেটাও এখানে বিবেচ্য বিষয়। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে তুলনা করার কোনও জায়গা নেই।”
বুধবারও চলবে সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি। বুধবার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে আইনজীবীরা সওয়াল করবেন। এদিন মামলাকারীরা বলেন, “আমরাও বলছি না ডিএ পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার। তবে উপভোক্তা মূল্য সূচকের বিষয়টি অনুসরণ করার কথা রাজ্য সরকারের রোপাতেই রয়েছে।”
আদৌ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ দেবে তো রাজ্য? পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, ডিএ মেটানোর মতো আর্থিক সামর্থ নেই রাজ্য সরকারের। ডিএ মেটানোর ক্ষেত্রে রাজ্যের স্বদিচ্ছারও অভাব রয়েছে বলেও ধারণা পর্যবেক্ষকদের।
The put up Supreme Court DA Case hearing | বকেয়া ডিএর ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে বলুন সরকারকে, রাজ্যের আইনজীবীদের পরামর্শ সুপ্রিম কোর্টের appeared first on Uttarbanga Sambad.