অনসূয়া চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে গরমের ছুটির সংজ্ঞা পালটে গিয়েছে। ১ মাস বা ১৫ দিনের নির্ধারিত ছুটি এখন আর নেই। এবছর ৩০ এপ্রিল থেকে স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি (Summer time Trip) শুরু হলেও কবে খুলবে সেই বিষয়টি কারও জানা নেই। তবে স্কুল খুললেই শুরু হয়ে যাবে পরীক্ষা। এই পরিস্থিতিতে অনলাইন পঠনপাঠনই একমাত্র ভরসা। পশ্চিমবঙ্গের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এই ছুটিতে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অনলাইনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যান্য শ্রেণির পড়ুয়াদের লেখাপড়ার দিকে খেয়াল রাখার চেষ্টা করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই অনলাইন ক্লাসে পড়ুয়াদের যোগদান কতটা রয়েছে সেবিষয়ে জলপাইগুড়ি শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা সংশয় প্রকাশ করেছেন।
জলপাইগুড়ির শহর সংলগ্ন মোহিতনগর তারাপ্রসাদ কলোনি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কোয়েলি রায় বর্মন বলেন, ‘সামার প্রোজেক্ট চলছে মাঝেমধ্যে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা বিশেষ করে অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের নোট ও হোমওয়ার্ক দিচ্ছেন।’ তিনি জানান, এই বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ পড়ুয়ারা থাকে চা শ্রমিক মহল্লায়, আবার কারও পরিবার চলে দিনমজুরি করে। তাই অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার দিকে বিশেষ নজর দিতে পারেন না। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের পক্ষেও প্রায় ৯০০ জন পড়ুয়ার লেখাপড়ার দিকে আলাদা করে নজর রাখা সম্ভব নয়৷ তাই পড়ুয়াদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, শহরের আনন্দ মডেল উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈকত ঘোষ বলেন, ‘যুগের সঙ্গে সঙ্গে পড়াশোনার ধরন পালটেছে। পড়ুয়াদের লেখাপড়ায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। বিশেষ করে যে সকল পড়ুয়াদের কোনও প্রাইভেট টিউশন নেই তারা যাতে এই ছুটিতে কোনও সমস্যায় না পড়ে।’ এছাড়াও সুনীতিবালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা দাস বলেন, ‘অনলাইন ক্লাসে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কতটা নিশ্চিত করা যাচ্ছে সেবিষয়ে সংশয় আছে৷’
শিক্ষক মহলের অনেকেই বলছেন, ছুটির সময় অনলাইনে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ পড়ুয়ার লেখাপড়া থমকে গিয়েছে। কারণ অনেকের স্মার্ট ফোন নেই, আবার কোথাও ইন্টারনেট কানেকশন ভালো না। তাই সকলের মতে, স্কুলগুলি তাড়াতাড়ি খুললে পঠনপাঠন ভালো হবে।