হরিশ্চন্দ্রপুর: ‘রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে শুধু বাংলাদেশি কেন, রোহিঙ্গারাও এসে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরে জনপ্রতিনিধির পদ দখল করবে। তখন আর ব্যানার্জি, চ্যাটার্জিদের খুঁজে পাওয়া যাবে না’। মালদার (Malda) পারলালপুর হাইস্কুলে এসে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ঘটনায় বিধ্বস্ত শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলার পর এমনই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
কয়েক মাস আগেই অভিযোগ ওঠে হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের প্রতীকে জিতে আসা তৃণমূল সমর্থিত প্রধান লাভলি খাতুনের শংসাপত্র জাল। পাশাপাশি আরও অভিযোগ ওঠে ওই প্রধান আসলে বাংলাদেশের নাগরিক। এলাকার এক ব্যক্তিকে নকল বাবা সাজিয়ে জাল ওবিসি সার্টিফিকেট তৈরি করে প্রধান পদ লাভ করেছেন।
লাভলি খাতুন গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জয়ী হওয়ার পর প্রধান পদ ওবিসি সংরক্ষিত হওয়ার ফলে সুযোগ বুঝে তৃণমূলে যোগদান করে প্রধান হন। তাঁর বিরুদ্ধে যে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হয়েছিলেন, সেই রাহেনা সুলতানা লাভলির বিরুদ্ধে জাল ওবিসি শংসাপত্র ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। হাইকোর্টের নির্দেশে চাঁচলের মহকুমা শাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় তদন্ত করেন। জানা যায়, তাঁর ওবিসি শংসাপত্র জাল। বাবার নাম হিসেবে যাঁর নাম ব্যবহার করেছেন, আদতেই তাঁর মেয়ে নন এই লাভলি। সাক্ষীদের সইও জাল। তারপরই বাতিল হয় তাঁর প্রধান পদ।
এদিন মালদায় এসে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘তৃণমূলের আমলে সবই সম্ভব। এরপর হয়তো দেখা যাবে রাজ্যের বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির আসনে শুধু বাংলাদেশি কেন রোহিঙ্গারা স্থান পাবেন।’ যদিও এ প্রসঙ্গে পালটা শাসক দলের জেলা পরিষদ সদস্য হরিশ্চন্দ্রপুর এক ব্লকের সভানেত্রী মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘বিজেপির কাজ হল শুধু উসকানি দেওয়া। লাভলি খাতুন কংগ্রেসের প্রতীকে জিতেছিলেন। পরে তৃণমূলে আসেন। আর ওঁর বিষয়টা এখন বিচারাধীন রয়েছে। আইন যেটা ভালো মনে করবে সেটাই করবে।’ হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর ব্লকের বিডিও সৌমেন মণ্ডলের কথায়, লাভলি খাতুনের জাল ওবিসি সার্টিফিকেট বিষয়টি সামনে আসার পর ওরা আবার আদালতে মামলা করেছে। মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সেই জন্য এখনও পর্যন্ত সদস্যপদ বাতিল কিংবা থানায় অভিযোগ দায়ের করা যায়নি। যদিও এনিয়ে লাভলি খাতুনকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।