উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির রাস্তা থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে আশ্রয় শিবিরে রাখার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আজ তার রায় ঘোষণা করবে। এর আগে, গত ১১ আগস্ট বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও আর মহাদেবেনের একটি বেঞ্চ কুকুর কামড় এবং জলাতঙ্কে মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি আদেশ জারি করে। ওই আদেশে কর্তৃপক্ষকে আট সপ্তাহের মধ্যে কমপক্ষে ৫,০০০ কুকুরের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করতে এবং পথ থেকে সমস্ত কুকুরকে অপসারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আদালত এও জানিয়েছিল যে, একবার ধরা হলে এই কুকুরদের আর জনপরিসরে ছাড়া যাবে না।
আদালতের এই রায় দেশজুড়ে পশুপ্রেমীদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক ও প্রতিবাদের জন্ম দেয়। তাঁদের মূল উদ্বেগ ছিল যে, গণহারে কুকুর অপসারণের ফলে তাদের নির্বিচার হত্যা করা হতে পারে অথবা আশ্রয়কেন্দ্রের অসুস্থ পরিবেশে তারা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। আন্দোলনকারীদের মতে, এই পদক্ষেপ অমানবিক, অবৈজ্ঞানিক এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাঁরা যুক্তি দেন যে, পথকুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনার একমাত্র কার্যকর উপায় হল বন্ধ্যাকরণ এবং টিকাকরণ।
অন্যদিকে, কেন্দ্র সরকার আদালতে পেশ করা তথ্যে জানিয়েছে যে, ২০২২ সালে দেশে ৩৭ লক্ষেরও বেশি কুকুরের কামড়ের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে এবং ৫৪ জনের সন্দেহজনক জলাতঙ্কজনিত মৃত্যু ঘটেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, মানব সুরক্ষার স্বার্থে কুকুরদের জনবসতি থেকে দূরে রাখা প্রয়োজন।
এই বিতর্কের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি এই মামলাটি বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা এবং এনভি আঞ্জারিয়ার একটি বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে পাঠান। উভয় পক্ষের যুক্তি শোনার পর বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রাখে। এর মধ্যে দিল্লি সরকার একটি নতুন বিজ্ঞপ্তিতে পথকুকুর ধরার কাজ শুরু করেছে, যদিও এই বিজ্ঞপ্তি দ্রুত কার্যকর করার বিরুদ্ধে আবেদনও করা হয়েছে। পুরো দেশ এখন এই বহুল বিতর্কিত মামলার চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে।