সামসী: বয়স মাত্র ৬ মাস। এর মধ্যেই বিরল স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (SMA TYPE-1) রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে সামসীর বাসিন্দা অংশিকা মন্ডল। জানা গিয়েছে, এই অসুখ সারাতে খরচ পড়বে প্রায় ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। কিন্তু এই বিপুল পরিমান টাকা তাঁর পরিবারের পক্ষে কোনও মতেই জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই ছোট্ট অংশিকাকে বাঁচাতে সরকারি ও বেসরকারি তরফে আর্থিক সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন অংশিকার অসহায় পরিবার।
অংশিকা মন্ডলের বাবা অনিমেষ মন্ডল পেশায় অধ্যাপক। সামসীতে অবস্থিত রতুয়া এস এন বোস পলিটেকনিক কলেজে অধ্যাপনা করেন তিনি। বাড়ি সুন্দরবন কুমিরমারি এলাকায়। মা বিটপি মন্ডল গৃহবধূ। সামসী মতিগঞ্জে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন তাঁরা। তাঁদের একমাত্র কন্যা সন্তান অংশিকা মন্ডল।
অনিমেষ মন্ডল জানান,অংশিকার বয়স এখন ৬ মাস চলছে। ওর যখন তিন মাস বয়স তখন তার শারীরিক উন্নতিতে কিছুটা ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। সেসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গেলে কিছু জেনেটিক টেস্ট লিখে দেন তিনি। ল্যাবে গিয়ে রক্তের নমুনা দিলে তা পাঠানো হয় ব্যাঙ্গালোর। ৪৫ দিন পর যে রিপোর্ট আসে তাতে দেখা যায় শরীরে এসএমএন-১ (SMN-1) জিনটি জন্ম থেকেই নেই তাঁর। অসুখটির নাম স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি(SMA TYPE-1), যা একটি বিরল রোগ।
এই প্রসঙ্গে অনিমেষ বাবু বলেন, ‘এরপর দেরি না করে মেয়ে অংশিকাকে নিয়ে দিল্লি এইমস-এ চলে যাই। সেখানে এই রোগের চিকিৎসা বাবদ জিন থেরাপি করতে একটা খরচের হিসেব দেওয়া হয়, যা প্রায় ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এই বিরল রোগের একমাত্র ঔষুধটি তৈরি হয় সুইজারল্যান্ডে। নোভার্টিস কোম্পানির এই মেডিসিনটির(ZOLGENSMA) বাজার মূল্য প্রায় ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। তবে নোভার্টিস কোম্পানির কাছ থেকে নিলে ছাড় দিয়ে তাঁরা ৯ কোটি টাকা দাম নেবেন।’ তবে এত বেশি মূল্যের ঔষুধটি কেনা অনিমেষবাবুর পক্ষে কোনও মতেই সম্ভব নয় বলেও পরিস্কার জানিয়েছেন তিনি।
অনিমেষবাবু আরও জানান যে, বাচ্চার ২ বছর বয়সের মধ্যেই ঔষুধটি তাঁকে দিতে হবে। ২ বছর পেরিয়ে গেলেই আর তাঁকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। বর্তমানে কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে অংশিকার চিকিৎসা চলছে। আপাতত রিসডিপ্লাম(RISDIPLAM) নামক একটি মেডিসিন ব্যাবহার করা হচ্ছে যার মুল্য ৬ লক্ষ টাকা। ঔষুধটির কার্যকারীতা দেড় মাস করে থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে মেয়ের চিকিৎসা বাবদ প্রায় ২০ লক্ষ টাকা দান পাওয়া গেছে। বাকি টাকা কিভাবে যোগাড় করব তা ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছিনা।’