Sitai | পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুতে আতঙ্ক গ্রামে 

Sitai | পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুতে আতঙ্ক গ্রামে 

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


সিতাই: বাড়িতে যেন মড়ক লেগেছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে মৃত্যু হয়েছে বাড়ির তিন সদস্যের। এখনও একজন সদস্য জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এক প্রতিবেশীরও চিকিৎসা চলছে। সিতাই-১ ব্লকের ব্রহ্মোত্তরচাতরা গ্রামে এমন ঘটনায় আতঙ্ক  ছড়িয়েছে। পরীক্ষানিরীক্ষা করেও মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করতে পারেনি স্বাস্থ্য দপ্তর। শুধু যে মানুষেরই মৃত্যু হচ্ছে তা নয়, ইতিমধ্যেই ওই বাড়ির তিনটি গোরু ও চারটি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। আতঙ্ক  ক্রমেই বাড়ছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।

প্রায় এক মাস আগে ওই গ্রামে জোনাক বর্মনের বাড়িতে একটি খাসির মৃত্যু হয়। পরিবারের পঁাচ সদস্য এবং প্রতিবেশীরা মিলে খাসিটির মাংস খেয়ে নেয়। পরবর্তীতে ওই বাড়ির তিন সদস্যের পরপর মৃত্যু হয় এবং বাড়ির গবাদিপশুর মৃত্যু হয়। গ্রামের বাসিন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, গবাদিপশুর মধ্যে কোনও একটি রোগ ছড়িয়েছে। সেই রোগের ফলেই বাড়ির গবাদিপশুগুলির মৃত্যু হচ্ছে এবং রোগগ্রস্ত খাসির মাংস খাওয়ার ফলেই বাড়ির সদস্যরা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে তিনবার লোক এসে পশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। যদিও এখনও কোনও নির্দিষ্ট রোগ চিহ্নিত করা যায়নি। এদিকে এলাকাবাসীদের দাবি, প্রশাসন যেন দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে ও পরিবারটির পাশে দাঁড়ায়।

যদিও একই পরিবারের সদস্যরা কীভাবে মারা গিয়েছেন, তা স্পষ্ট করে বলতে পারেনি স্বাস্থ্য দপ্তর। কোচবিহার জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রিকুমার আরি বলেন, ‘খবর পাওয়ার পরেই আমরা স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলাম। পরিবারের সদস্যদের পরীক্ষানিরীক্ষার পাশাপাশি প্রতিবেশীদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভাইরাসঘটিত কোনও রোগ বা মৃত্যুর কারণ চিহ্নিত করতে পারিনি। আমরা আরও পরীক্ষানিরীক্ষা করব। সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। পরিবারটি আমাদের নজরদারিতেই আছে।’

পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রথমে গত ২২ এপ্রিল মারা যান জয়তী বর্মন। এরপর ২৫ এপ্রিল স্বামী জোনাক বর্মনের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ ১৪ মে মারা যান তঁার প্রথম পক্ষের স্ত্রী ক্ষীরবালা বর্মন। মৃত্যুর সময় তিনজনেরই উপসর্গ ছিল জ্বর ও শ্বাসকষ্ট। তাঁদের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। পরিবারে বর্তমানে রয়েছেন জোনাকের দুই সন্তান ২৪ বছরের রাখাল বর্মন ও ১৫ বছরের অর্চনা বর্মন।

এই ঘটনার সপ্তাহ দুয়েক আগে ওই বাড়িতেই জোনাক বর্মন ও তাঁর ভাইয়ের পোষা তিনটি গোরু ও চারটি ছাগল মারা যায়। সোমবার ফের ওই এলাকার জোনাকের প্রতিবেশীর একটি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে, যা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে গ্রামে।

স্থানীয় তরুণ কািমনীকান্ত বর্মন বলেন, ‘সমস্যা দেখা দিলে আমরা প্রথমে সিতাই ব্লকের স্বাস্থ্যকেন্দ্র, তারপর দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল ও কোচবিহার নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসা চলাকালীনই ওঁরা মারা যান।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালেও জোনাক বর্মনের বাড়ির আরও একটি ছাগল মারা গিয়েছে। পরিবারের অপর এক সদস্য শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

জোনাকের ছেলে রাখাল বলেন, ‘বাবা-মা কোনও অসুখে ভুগছিলেন না। হঠাৎই ২২ দিনের মধ্যে আমাদের তিনজন পরিবারের সদস্যের মৃত্যুর  কোনও সাধারণ ঘটনা নয়।

স্থানীয় বাসিন্দা পিংকি বর্মন বলেন, ‘তিনজন অভিভাবকের মৃত্যু হয়েছে। এখন ওই দুই ছেলেমেয়ে কীভাবে বাঁচবে, তা ভাবনার বিষয়। প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার।’ মৃত জয়তী বর্মনের ভাই জল্পেশ বর্মন বলেন, ‘কীভাবে কী ঘটছে বুঝতে পারছি না। ডাক্তাররা অনেক পরীক্ষা করছে, সবাই আতঙ্কে আছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *