নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: এসআইআর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর চাপানউতোর। এই ইস্যুতে সুর চড়িয়ে বিজেপিকে বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআরকে ‘সাইলেন্ট ইনভিসিবল রিগিং’ বা ‘অদৃশ্য রিগিং’ বলে দুষলেন তিনি। কোনও ভোটারের নাম বাদ গেলে যে আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়বে, সে ইঙ্গিতও দিলেন অভিষেক।
সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “বিজেপি নেতারা বলছে বাংলায় ২ কোটি নাম বাদ যাবে। এখনও তো SIR শুরুই হয়নি! কীসের ভিত্তিতে বিজেপি এই মিথ্যাচার করছে? তবু নির্বাচন কমিশন চুপ করে রয়েছে। তবে এটা বলব, ওরা দুটো নাম বাদ দিয়ে দেখাক, বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দেবে কীভাবে জবাব দিতে হয়।” অভিষেকের দাবি, “এই SIR প্রক্রিয়া নির্বাচনী লড়াই নয়, গণতন্ত্র কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত। কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করছে। বিজেপিকে জেতাতে নির্বাচন কমিশন এভাবে চুপিসারে ভোট লুটের প্রক্রিয়া চালু করেছে। এটা একপ্রকার এনআরসি চালুর চেষ্টা।”
দিল্লির রাস্তায় গণআন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, “মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না, অথচ কুকুর ও ট্র্যাক্টরের নামে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দিয়ে কমিশন সেগুলি গ্রহণ করছে! বাবার নাম লেখা ‘কুত্তা বাবু’, মায়ের নাম ‘কুত্তিয়া দেবী’। এখন প্রশ্ন, এই কুকুরটা কি বাংলাদেশ থেকে এসেছে? বিহারে যা হয়েছে, বাংলায় সেই চেষ্টা করলে ফল ভুগতে হবে। বাংলার মাটি কেউ ভোটাধিকার কেড়ে নিতে দেবে না। প্রয়োজনে দিল্লির রাস্তায় গণআন্দোলন নামবে।”
উল্লেখ্য, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০০৩ সালে বিহারে শেষবার SIR হয়েছিল। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী- সহ অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন। তারা বলেছে, যাতে শুধুমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরাই ভোটদানের অধিকার পান সেটা নিশ্চিত করতে এই সংশোধনী। বিহারের পরে এক এক করে অন্যান্য রাজ্যগুলিতে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হবে। নজরুল মঞ্চে নদিয়া, দুই ২৪ পরগণা এবং মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে শতাধিক ব্লকের বিএলও-দের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী দিনে পর্যায়ক্রমে অন্য BLO-দেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এটাকে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনীর প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসাবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।