সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি : কেন্দ্র থেকে আবাস যোজনা বা একশো দিনের কাজের মতো বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা আসা বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষের জন্য মঙ্গলবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ১৩০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করল। গত বছরের বাজেটের তুলনায় যা এক কোটি টাকা কম। আয়ব্যয়ে প্রায় সমতা এনে মহকুমা পরিষদের বর্তমান বোর্ড এটিকে ‘জিরো ব্যালেন্স’ বাজেট বলছে। বাজেটে নিজস্ব আয় বাড়ানোর পাশাপাশি মহকুমা এলাকার পরিবেশ, সৌন্দর্যায়নের ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, ‘গত বছর বাজেটের মধ্যে কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা ধরা ছিল। সেজন্য ১৩১ কোটি টাকার বাজেট হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা না মেলায় এবছর বাজেটে আর কেন্দ্রের সেই সব প্রকল্পের টাকা ধরা হয়নি। আয় যা হবে সেই অনুযায়ী এবারের বাজেেট বরাদ্দ করা হয়েছে।’
বাজেটে স্বাস্থ্য উন্নয়ন স্থায়ী সমিতিতে ১৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা, পূর্ত ও ক্রীড়া খাতে ৮০ কোটি, কৃষি, সেচ সমবায়ে ১০ কোটি ৫০ লক্ষ, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে ১০ কোটি, বনভূমিতে ৭ কোটি সহ অন্যান্য খাত মিলিয়ে ১৩০ কোটি টাকার বাজেট করা হয়েছে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে পাওয়া টাকার পাশাপাশি নিজস্ব তহবিলের টাকা ধরা হয়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের তরফে নিজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য পর্যটন সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নকশালবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়া ব্লকে চারটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই জায়গাগুলি জবরদখল হয়েছে। সেগুলি উদ্ধার করে মহকুমা পরিষদের তরফে ছোট ছোট পর্যটনকেন্দ্রের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আয়ের পথ সুগম হবে বলে বর্তমান বোর্ডের তরফে দাবি করা হয়েছে।
খেলার মানোন্নয়নের জন্য নকশালবড়িতে ইন্ডোর স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের তরফে সেজন্য প্রথম পর্যায়ে সাড়ে তিন কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। ইন্ডোর গেম খেলার পরিকাঠামোর পাশাপাশি সেখানে সুইমিং পুল গড়ে তোলা হবে। একই সঙ্গে ফাঁসিদেওয়া ব্লকে দুটি মাঠকে খেলার উপযোগী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মহকুমা এলাকায় বহুতল নির্মাণের ভেটিং থেকে পরিষদের সবচেয়ে বেশি আয় হয়। চলতি মাসেই নকশাবাড়িতে মল থেকে সার প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হবে। সেজন্য ইতিমধ্যে মহকুমা পরিষদের তরফে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ করা হয়েেছ। নতুন প্রকল্পের থেকেও আয় হবে বলে পরিষদের তরফে দাবি করা হয়েছে। সভাধিপতির কথায়, ‘উত্তরবঙ্গে এটাই প্রথম মল থেকে সার তৈরির প্রকল্প হচ্ছে। পাশাপাশি চারটি টোল বসানো হচ্ছে। যেখান থেকে আয় বাড়বে। মডেল পার্ক তৈরি করে আয়ের পথ বাড়ানো হবে।’