Siliguri | সেলের বাজারে ভাটার টান, দামে কম হলেও মান নিয়ে সংশয়ে ক্রেতারা

Siliguri | সেলের বাজারে ভাটার টান, দামে কম হলেও মান নিয়ে সংশয়ে ক্রেতারা

শিক্ষা
Spread the love


প্রিয়দর্শিনী বিশ্বাস, শিলিগুড়ি: ‘সেল, সেল, সেল! এত কম দামে আর কোথাও পাবেন না। এখনই আসুন আর নিয়ে যান আপনার পছন্দের জিনিস।’ চৈত্রের শহরে এই চেনা বাক্যগুলি শুনতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ নেই। নববর্ষের আগে চৈত্র সেলের বাজারে কম দামে নিজের পছন্দের ও প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নেওয়াই রেওয়াজ। শেষ চৈত্রে শিলিগুড়ি (Siliguri) শহরের যে কোনও মার্কেটে ঢুকলেই দোকানদারদের চিৎকার করে ক্রেতা ডাকার চেনা ছবি চোখে পড়বেই। তবে অদ্ভুত ব্যাপার এই যে এবছর সেই ডাককে উপেক্ষা করে ক্রেতাদের এগিয়ে যেতে দেখা গেল। সেলের শেষবেলায় নাকি শহরবাসীর আর কেনাকাটায় মন নেই। তাই দোকানদারদের ব্যবসাও ক্ষতির মুখে পড়েছে। বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকেই গালে হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতাদের দাবি, সেলের শেষবেলায় নিশ্চয়ই খারাপ মানের জিনিস বিক্রি হচ্ছে। কিংবা জামাকাপড় বা জুতোগুলিতে কোনও খুঁত থাকতে পারে বলেও অনেকের সন্দেহ। কলেজ পড়ুয়া এক ক্রেতা নিহারিকা দে’র কথায়, ‘সেলে এখন যা বিক্রি হচ্ছে সেগুলি কিছু পছন্দ হয়নি। ভালো জিনিস আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে।’

বছরে একবারই চৈত্র সেল আসে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এবছর সেল শুরুর প্রথম দিকে বাজারের অবস্থা এমন ছিল না। কেনাবেচা মোটামুটি ভালোই চলছিল। তবে শেষ সময়েই ব্যবসার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। একেই তো বিক্রি নেই। তার ওপর যে কয়েকটা হাতেগোনা জামাকাপড় বিক্রি হচ্ছে সেগুলোতেও যদি এত ছাড় দেওয়া হয়, তাহলে লাভের মুখ দেখবেন কী করে? প্রশ্নটি জিজ্ঞেস করতেই হকার্স কর্নারের এক ব্যবসায়ী রবি সেন বললেন, ‘সারাবছর যা জিনিস তুলি তার সব বিক্রি হয় না। কোনওটা সাইজের সমস্যার জন্য থেকে যায় আবার কোনওটা কারও পছন্দ হয় না। আমি দোকানের সেই জিনিসগুলিকেই চৈত্র সেলে বিক্রি করি। যদিও সবই নতুন। তবু বহুদিন দোকানে জিনিসগুলি ফেলে রাখা যায় না। কাপড় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেকারণেই খুব সামান্য লাভ রেখে সব বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করি।’

এমনিতেই শহর এখন শপিংমলে ঠাসা। অন্যদিকে, প্রতিটি বাড়িতেই আজকাল অনলাইন শপিং-এর রমরমা বাড়ছে। ফলে দোকান থেকে জামাকাপড় কেনার ধুম অনেকটাই কম। এইসময় অনেক ব্যবসায়ী আবার শুধুমাত্র সেলে বিক্রির জন্যেও জামাকাপড় আমদানি করেছিলেন। শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের ব্যবসায়ী প্রিয়াংকা সাহানিও তাঁদের মধ্যে একজন। তাঁর কথায়, ‘সেলে বিক্রি করার জন্য আমরা বাইরে থেকে কাপড় আনাই। এগুলি খুব বেশি দামের হয় না। সাধারণত ৪০-৫০ টাকা লাভ রেখে বিক্রি করে দিই। এটাই আসলে চৈত্র সেলের ঐতিহ্য। তবে এখন তেমন বিক্রি নেই। হয়তো সবাই অনলাইন বা শপিং মল থেকে জামাকাপড় কিনছেন।’ বর্তমানে বিধান মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, হকার্স কর্নার, মহাবীরস্থানজুড়ে কোথাও ২০০ টাকায় টি-শার্ট পাওয়া যাচ্ছে আবার কোথাও ৩০০ টাকায় শাড়ি মিলছে। এছাড়া ২০০ টাকায় শার্ট, জিন্স, ৩০০ টাকায় সালোয়ার, জুতো সহ আরও কত কী। মাত্র ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই যা যা বিকোচ্ছে তা কেনার লোকেরও অভাব।

সেল থেকে এখন কিনছেন না কেন? শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে আসা এক মহিলা মৌসুমি তালুকদারকে একথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ‘যখন চৈত্র সেল শুরু হয় তখন গরমের কিছু জামাকাপড় কিনেছিলাম। তবে শেষবেলায় ভরসা পাই না। হয়তো সব পুরোনো জিনিসগুলো বিক্রি করবে। ছেলেমেয়েরা তাই অনলাইন থেকেই জিনিস কিনে নিয়েছে।’ তাই দোকান সাজিয়ে ঠায় দাঁড়িয়েই আছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতা টানতে ক্রমাগত চিৎকার করছেন। আরেক ক্রেতা কাঞ্চনা পাল এর আগেও সেলে কিছু কেনেননি। তাঁর মতে, ‘এখনকার জিনিসগুলি কিনতেও ভয় লাগে। কাপড়গুলি ভালো হবে কিনা তাই ভাবি। শেষে সেলে কিনতে গিয়ে যদি ঠকে যাই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *