তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: এপ্রিলে পরীক্ষা। অথচ পাঠ্যবই পায়নি সপ্তম, অষ্টম শ্রেণির বহু পড়ুয়া। কেন বই পাওয়া যাচ্ছে না? প্রশ্ন তুলছেন ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। জানা যাচ্ছে, সাপ্লাইয়ের অভাবে বই পায়নি বহু পড়ুয়া। বাধ্য হয়ে সহপাঠীর থেকে বই নিয়ে ফোটোকপি করে চলছে পড়াশোনা।
কেউ পায়নি অঙ্কের বই। কেউ আবার পরিবেশবিজ্ঞানের। শিলিগুড়ি গার্লস ও বয়েজ হাইস্কুল, নেতাজি হাইস্কুলের মতো বিদ্যালয়তেও এই সমস্যা সামনে এসেছে। শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে ইতিমধ্যেই বিষয়টি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। পড়ুয়া অনুযায়ী স্কুলে কেন পর্যাপ্ত বই আসেনি, বারবার সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
শিলিগুড়ি (Siliguri) শিক্ষা জেলার পাশাপাশি কালিম্পং জেলাতেও একইরকম সমস্যা দেখা গিয়েছে। বহু স্কুলে পর্যাপ্ত বই না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কালিম্পং শিক্ষা জেলার ডিআই রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘বেশ কয়েকটি স্কুল থেকে আমায় মৌখিকভাবে বই কম থাকার কথা জানানো হয়েছে। তবে পুরো বিষয়টা সার্কেল অনুযায়ী এসআই’রা দেখেন। তাঁদের কাছ থেকে আমি ফের রিপোর্ট চাইব।’
গত ২ জানুয়ারি স্কুলগুলিতে ঘটা করে পালিত হয় বই দিবস। সেদিনই পড়ুয়াদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু সকলে সেদিন সব বই পায়নি। সেদিনই স্কুলের তরফে বলা হয়েছিল, যারা সব পাঠ্যপুস্তক পায়নি, তাদের দ্রুত বই দেওয়া হবে। তারপর কেটে গিয়েছে আড়াই মাস। এখনও বই এসে েপৗঁছায়নি স্কুলগুলিতে।
শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের এক ছাত্রীর মা বলছেন, ‘আমার মেয়ে অঙ্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বই পায়নি।’ মেয়ের কাছে বিষয়টি জানার পর স্কুল কর্তৃপক্ষকে তিনি জানিয়েছেন। এপ্রিলে শুরু হবে পরীক্ষা। এই পরিস্থিতিতে সহপাঠীর কাছ থেকে বই নিয়ে ফোটোকপি করে পড়তে হচ্ছে তাঁর মেয়েকে।
বয়েজ হাইস্কুলেও বেশ কয়েকজন এই সমস্যার মধ্যে পড়েছে। বিষয়টি অজানা নয় স্কুল কর্তৃপক্ষের। নেতাজি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজীব ঘোষ বললেন, ‘কিছু বইয়ের সাপ্লাই কম থাকায় সেগুলো কিছুদিন পরে আসে। সেইজন্য পড়ুয়াদের একাংশ পরে বই পায়।’
কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, পরে পরে বলে তো আড়াই মাস কাটল, এতদিনেও সমস্যা মেটানো গেল না? এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি।
সাপ্লাই কম থাকলে অনেক সময় দু’তিনবারেও বই আসে। জানালেন বয়েজ হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রণজয় দাস। তাঁর কথায়, ‘পরে দেওয়ায় অনেক পড়ুয়া বই নিতেও ভুলে যায়। তবে এবার স্কুল খুললে সেই সমস্যা আর থাকবে না।’ রণজয় আশাবাদী হলেও কতদিনে পড়ুয়াদের হাতে বই আসে, সেদিকে নজর থাকবে শিক্ষা মহলের।