উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: শশী থারুরের (Sashi Tharoor) মোদি-ভজনায় ফের ফাঁপরে কংগ্রেস। কিছুদিন আগে নরেন্দ্র মোদির অপারেশন সিঁদুরকে ঢালাও শংসাপত্র দিয়ে তিনি বিব্রত করেছিলেন দলকে। এবার একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেশের ‘প্রধান সম্পদ’ বলে বর্ণনা করে বিতর্কে আর একদফা ইন্ধন জুগিয়েছেন থারুর। ইতিমধ্যে কংগ্রেসি সাংসদের লেখা নিবন্ধ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পোর্টাল থেকে সমাজমাধ্যমে ভাগ হওয়ায় বিরোধী শিবিরে হইচই শুরু হয়েছে।
‘দ্য হিন্দু’-তে প্রকাশিত ‘অপারেশন সিঁদুর: বিশ্বজনীন যোগাযোগ থেকে শিক্ষা’ শীর্ষক নিবন্ধে থারুর মোদির ‘শক্তি, উদ্যম এবং বিশ্বে ভারতের স্বার্থে সক্রিয় ভূমিকা’-র উল্লেখ করে তাঁকে ভারতের ‘প্রধান সম্পদ’ বলে জানান। থারুরের কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যম, কর্মদক্ষতা এবং বিশ্বমঞ্চে যোগাযোগের আগ্রহ ভারতের একটি বড় সম্পদ। তাঁর এই সক্রিয়তাকে সর্বতোভাবে সমর্থন করা উচিত।’
থারুরের মন্তব্যে কংগ্রেসের অন্দরে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। দলের একাংশ তাঁকে বিজেপির ‘প্রচার মুখপাত্র’ আখ্যা দিয়ে আক্রমণ শুরু করেছে। পাশাপাশি জল্পনা চলছে তিরুবনন্তপুরমের সাংসদের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়েও। যদিও সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন থারুর নিজেই। বলেছেন, ‘আমি দলের অনুগত সৈনিক। কিছু নেতার সঙ্গে মতপার্থক্যের জন্য আমি দল ছাড়ব না।’
অপারেশন সিঁদুরের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় দু’সপ্তাহের জন্য মস্কো উড়ে যান থারুর। তার আগে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়েও পাননি। এর আগে কেরলে উপনির্বাচনের প্রচারে ডাক না পাওয়া নিয়ে দলের বিরুদ্ধে তিনি হালকা খোঁচা দেন। নীলাম্বুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনকে ঘিরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাকে তো ডাকেনি কেউ। যেখানে ডাকা হয় না, সেখানে যাই না।’
কেরল প্রদেশ কংগ্রেস অবশ্য থারুরের দাবি নাকচ করে জানায়, সাংসদকে ‘তারকা প্রচারক’-এর তালিকায় রাখা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেইসময় সরকারি কাজে বিদেশে ছিলেন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, থারুরের সাম্প্রতিক অবস্থান একদিকে বিজেপির সুবিধা করে দিচ্ছে। অন্যদিকে তা দুর্বল করছে কংগ্রেসকে। এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে দলীয় নেতৃত্বকেই।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপালের কথাতেও তার ইঙ্গিত মিলেছে। তাঁর কথায়, ‘কংগ্রেস কখনও কারও মতপ্রকাশ বা চলাচলের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে না। তবে কেউ ‘লক্ষ্মণরেখা’ পেরোলে দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য।’