শিলিগুড়ি : রাজ্যের দু’জায়গায় বালি ব্যবসায়ীদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ইডি একদিনে ৯০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ, অবৈধ বালি পাচার করে ব্যবসায়ীরা ফুলেফেঁপে উঠেছে। এদিকে, মঙ্গলবার যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাগডোগরা থেকে নেমে নৌকাঘাটের তৃতীয় মহানন্দা সেতু হয়ে উত্তরকন্যার দিকে যাচ্ছিলেন তখনও শিলিগুড়িতে দেদারে নদী থেকে বালি চুরি চলছিল। তৃতীয় মহানন্দা সেতু থেকে মাটিগাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবস্তি এলাকায় তাকালেই দেখা যাচ্ছিল মহানন্দা নদীতে থার্মোকলের ভেলা নামিয়ে দেদারে বালি, পাথর চুরি চলছে। রাজ্যে প্রশাসনিক প্রধান থাকাকালীন বালি, পাথর চুরি যখন অব্যাহত থাকে সেখানে যে সারা বছর সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এই কারবার চলে তা বলাই বাহুল্য।
মাটিগাড়া থানার কলাবস্তিতে মহানন্দা নদী থেকে বালি, পাথর চুরি চলছে আবার পতিরামজোত এলাকায় বালাসন নদী থেকে বালি, পাথর চুরি হচ্ছে। অন্যদিকে, ভক্তিনগর থানার মিলিটারি ঘাট এবং আশপাশের কয়েকটি জায়গাতেও অবাধে বালি, পাথর তুলে পাচারের কারবার চলছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এই পাচার করে একাংশ ফুলেফেঁপে উঠছে। কিন্তু সবকিছু দেখেও যেন প্রশাসনের কর্তারা কিছুই দেখছেন না।
মাটিগাড়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দেওয়া লাম ভুটিয়া বলেন, ‘কলাবস্তি ও পতিরামজোত এলাকায় অভিযান করে বালি, পাথর চুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। নতুন করে সেই চুরি শুরু হলে আবারও অভিযান শুরু করা হবে।’ রাজগঞ্জের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক গোপাল বিশ্বাসের কথায়, ‘ব্লকজুড়ে সমস্ত জায়গাতে অভিযান করা হচ্ছে। অভিযান আরও বাড়ানো হবে।’
মাটিগাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবস্তিতে ভোর থেকে সন্ধ্যা গড়ানোর আগে পর্যন্ত প্রতিদিন অবৈধ কারবার চলছে। অভিযোগ, এই কারবারে স্থানীয় এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। কলাবস্তিতে নদী থেকে বালি, পাথর তোলার ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে কোনও ধরনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাঁধের নীচে ট্রাক নামিয়ে বালি, পাথর বোঝাই করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রতিদিন অন্তত ৫০ ট্রাক বালি, পাথর পাচার হচ্ছে। আর পতিরামজোত এলাকায় নদীঘাটে সন্ধ্যার পর বালি, পাথর চুরির রমরমা শুরু হয়। সন্ধ্যায় অগণিত ট্রাক নদীর মধ্যে নেমে যায়। কিন্তু নদীতে ট্রাক নামিয়ে বালি, পাথর তোলা প্রশাসন বন্ধ করে রেখেছে। কিন্তু পাচারকারীরা প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই কারবার করছে। একই অবস্থা মিলিটারি ঘাট সহ আশপাশের একাধিক ঘাটে।