উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫-এ পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশের ম্যাচ চলাকালীন ধারাভাষ্যের সময় প্রাক্তন পাকিস্তানি ক্রিকেটার সানা মিরের (Sana Mir) ‘আজাদ কাশ্মীর’ কথাটির ব্যবহার ঘিরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফের রাজনৈতিক বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মিরের এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যদিও পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার রাতেই সমাজমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে সাফাই দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যেকার ম্যাচের ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন সানা মির। এই সময় পাকিস্তানের ক্রিকেটার নাতালিয়া পারভেজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরকে (POK) উল্লেখ করে সানা মির বলেন, “নাতালিয়া, যে কাশ্মীর, আজাদ কাশ্মীর থেকে এসেছে, সে লাহোরে অনেক ক্রিকেট খেলেছে। তাঁকে তাঁর বেশিরভাগ ক্রিকেট খেলার জন্য সেখানেই আসতে হয়।” তাঁর এই মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই অভিযোগ করেন, সানা মির উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনীতিকে খেলার মঞ্চে নিয়ে এসেছেন।
এরপরেই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সানা মির একটি দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করেন। তিনি জানান, তাঁর মন্তব্যকে অকারণে বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে এবং খেলার জগতের মানুষকে অপ্রয়োজনীয় চাপের মুখে ফেলা হচ্ছে।
তিনি দাবি করেন, তাঁর মন্তব্য কোনওভাবেই রাজনৈতিক ছিল না, বরং একজন ধারাভাষ্যকার হিসেবে তিনি কেবল একজন পাকিস্তানি ক্রিকেটারের জীবন সংগ্রামের দিকটি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন, যিনি দেশের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে এসে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ক্রিকেটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
মির আরও দাবি করেন যে, তিনি নির্দিষ্ট উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেই মন্তব্যটি করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি আমার গবেষণার উৎসের স্ক্রিনশটও সংযুক্ত করছি। যদিও আমি জানি তারা হয়তো এতক্ষণে এটি পরিবর্তন করে ফেলেছে, কিন্তু আমি সেই তথ্যই উল্লেখ করছিলাম।” তাঁর কথায়, “দয়া করে এটির রাজনীতিকরণ করবেন না। বিশ্ব মঞ্চে ধারাভাষ্যকার হিসাবে আমাদের কাজ খেলোয়াড়দের সাহস, দৃঢ়তা এবং অনুপ্রেরণামূলক গল্প তুলে ধরা। আমার হৃদয়ে কোনও বিদ্বেষ নেই বা কারও অনুভূতিতে আঘাত করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।”
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপেও এই উত্তেজনার ছাপ দেখা গিয়েছিল। সে সময় ভারতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল জয়ী হওয়ার পর পাকিস্তানের উচ্চ সরকারি পদে আসীন তথা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান মহসিন নকভির হাত থেকে ট্রফি ও মেডেল নিতে অস্বীকার করে। এমনকি পাক দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলাতেও বিরত থাকে টিম ইন্ডিয়া।
এই প্রেক্ষাপটে, আগামী রবিবার, মহিলা বিশ্বকাপে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের মুখোমুখি হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলও পুরুষ দলের নীতি অনুসরণ করে পাক দলের সঙ্গে কোনও প্রথাগত আচরণ (যেমন হ্যান্ডশেক) থেকে বিরত থাকতে পারে।