গাজোল: বৃহস্পতিবার রাতে সদ্যোজাত এক কন্যা সন্তানকে উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গাজোলের বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাসিমপুর গ্রামে। ভুট্টা খেতের পাশে একটি পুকুরের ধারে চেয়ারের উপরে রাখা ছিল ওই শিশু কন্যাটি। দেখতে পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন ওই পুকুর মালিক। সদ্যোজাত শিশুকন্যা উদ্ধারের ঘটনার খবর চাউর হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামের মহিলারা শিশুটির যত্নআত্তি শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে গাজোল থানার পুলিশ। রাতেই শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়। তবে সদ্যোজাত শিশুকন্যা উদ্ধারের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাসিমপুর গ্রামের প্রায় ৫০০ মিটার দূরে মটকাহার নামক নির্জন এলাকায় রয়েছে একটি পুকুর। এই পুকুরের খানিকটা দূরে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর থানা এলাকার মনোহর পাড়া গ্রাম। পুকুরের পাশে রয়েছে ভুট্টার জমি। সন্ধ্যার পর জমি থেকে গোরু আনতে যান পুকুরের মালিক। এই সময় পুকুরপাড়ে দেখতে পান চেয়ারের উপর রয়েছে সদ্যোজাত এক শিশুকন্যা। শিশুটিকে দেখেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তাঁর। এরপরই শিশুটিকে উদ্ধার করে সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। শিশু উদ্ধারের ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। শিশুকন্যাটিকে দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা। পাড়ার মহিলারা শিশুটির যত্নআত্তি শুরু করেন। এক মহিলা তার বুকের দুধ পান করান শিশুটিকে। এলাকাবাসীর বক্তব্য শিশুটির বয়স ১ থেকে ২ দিন হতে পারে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। শিশুকে উদ্ধার করে এদিন রাতেই হাসপাতালে নিয়ে আসেন তারা।
হাসপাতাল সুপার ডাঃ অঞ্জন রায় জানান, রাতে শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সদ্যোজাত ওই শিশুটির ওজন ২ কেজি ৩০০ গ্রাম। শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিশুটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে শিশু টিকে তুলে দেওয়া হয়। ডাঃ রায় বলেন, ‘বিষয়টি অমানবিক। হতে পারে এটি কোন কুমারী মায়ের সন্তান। অথবা কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণের জন্য ফেলে রাখা হয়েছে এমনটিও হতে পারে। তবে যে বা যারা শিশু কন্যাটিকে ওখানে ফেলে গেছে তারা মানুষের পর্যায়ে পড়ে না। পুকুর মালিক যদি শিশুকে উদ্ধার করতে না পারতেন, তাহলে হয়তো রাতে শেয়াল-কুকুরে ছিঁড়ে খেতো।’
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কে বা কারা শিশুটিকে ওই এলাকায় ফেলে গেল সেই বিষয় নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত।