Rajganj | রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতে ভয়াবহ পরিস্থিতি, জোড়া রোগের প্রকোপে আক্রান্ত প্রায় ১৫০

Rajganj | রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতে ভয়াবহ পরিস্থিতি, জোড়া রোগের প্রকোপে আক্রান্ত প্রায় ১৫০

শিক্ষা
Spread the love


রামপ্রসাদ মোদক, রাজগঞ্জ : জোড়া রোগের প্রকোপে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়েছে।

ল্যাপ্টোস্পাইরা এবং হেপাটাইটিস ‘এ’-র প্রকোপে রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের চেকরমারি গ্রামে ইতিমধ্যেই ১০০ জন আক্রান্ত। শেফালি দাস নামে এক মহিলা মারা গিয়েছেন। প্রায় ১০ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তাঁকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থেকে তিনি মারা যান। শেফালির ছেলে রোহিত রোগের উপসর্গ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি। গ্রামে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে ১১ জন রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ১০ জন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পাশাপাশি শিলিগুড়ির বিভিন্ন নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। পার্শ্ববর্তী পেলকুগছ গ্রামের প্রায় ৪০ জন ল্যাপ্টোস্পাইরা ও হেপাটাইটিস ‘এ’-র উপসর্গে আক্রান্ত। পাশের গ্রাম গিরানগছেও রোগ ছড়াচ্ছে। চেকরমারি ও  পেলকুগছের বেশিরভাগ মানুষ টিউবওয়েলের জল পান করেন। আক্রান্তদের মধ্যে অনেকে সৌরবিদ্যুৎচালিত প্রকল্পেরও জল খান। প্রসঙ্গত, ল্যাপ্টোস্পাইরা ইঁদুরের মূত্র ও হেপাটাইটিস ‘এ’ সংক্রামিত জলের মাধ্যমে ছড়ায় বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। পরিস্থিতি প্রতিকূল হলেও স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিনিধিরা এলাকায় যাননি বলে বাসিন্দাদের দাবি।

জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার বলেন, ‘এ’ রোগ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এলাকায় মেডিকেল টিম গিয়েছে। ওষুধপত্র সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেওয়া হচ্ছে।’ রাজগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রাহুল রায় বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের (পিএইচই) কর্মীরা ওই এলাকাগুলি থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠিয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি দল রবিবার ওই এলাকায় গিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

বাসিন্দারা অবশ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না। চেকরমারির বাসিন্দা মমতা সরকার বললেন, ‘আমার বাড়িতে পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু কোনও চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী আমাদের বাড়িতে আসেননি।’ শেফালি দাসের ভাশুর কার্তিক দাসেরও একই দাবি। সরকারি উদাসীনতার অভিযোগে চেকরমারির গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মী দাসের মতো অনেকেই সরব হয়েছেন। রবিবার চেকরমারি গ্রামের মোড়ে বিষ্ণু প্রধানের সঙ্গে দেখা হল। তিনি বললেন, ‘আমার ছেলে জীবন প্রধান ‘এ’ রোগের উপসর্গ নিয়ে বর্তমানে রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি। গ্রামের প্রায় ১০০ জনের বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত।’ পাশেই দাঁড়িয়ে মণি সরকার বলেন, ‘আমার মেয়ে মনীষা সরকার জলপাইগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এদিন বাড়ি ফেরে।’ পার্শ্ববর্তী পেলকুগছ গ্রামের আমিরুল হক এই রোগের উপসর্গ নিয়ে রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই গ্রামেরই বাসিন্দা শম্পা খাতুন বললেন, ‘ছেলে সিরাজ মোহাম্মদ জ্বর ও জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তিনদিন ভর্তি ছিল। বাড়ি আসার পরদিন ছেলের শরীর খারাপ হয়। ওকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেছি।’

সমস্যা মেটাতে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবিতে বাসিন্দারা সরব হয়েছেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *