Raiganj | সাপের ভয়ে সিঁটিয়ে পড়ুয়ারা, হাজিরা কমছে স্কুলে

Raiganj | সাপের ভয়ে সিঁটিয়ে পড়ুয়ারা, হাজিরা কমছে স্কুলে

শিক্ষা
Spread the love


দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: ‘সেই সাপ জ্যান্ত / গোটা দুই আন তো / তেড়েমেরে ডাণ্ডা / করে দিই ঠান্ডা।’ পড়ার বইতে এই ছড়া তো সকলেই মুখস্থ করেছে। কিন্তু বাস্তবে? সাপ দেখলে সিঁটিয়েই যায় শিশুরা। ফলে সাপের ভয়ে হাজিরা কমছে স্কুলে। ঘটনা রায়গঞ্জের ভাতঘরা কাটিহার অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বেহাল জরাজীর্ণ অবস্থা স্কুলবাড়ির। অনুকূল পরিবেশ পেয়ে ক্লাসঘরে পড়ুয়ার বদলে বাড়ছে সাপের উপদ্রব। তাতেই অভিভাবকরা ভয়ে আর ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না। অনেক পড়ুয়া ইতিমধ্যে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

দেড় দশক আগে স্রেফ একটি বিল্ডিং খাড়া করে দেওয়া হয়েছিল ভাতঘরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য। কিন্তু সেই ঘরের দেওয়ালে আজও না পড়েছে পলেস্তারার প্রলেপ, না হয়েছে পাকা মেঝে। স্যাঁতসেঁতে মাটির মেঝেতে বসেই চলছে খুদে পড়ুয়াদের পঠনপাঠন। শিশুদের জন্য অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ হলেও সেই ঘর হয়ে উঠেছে বিষধর সাপ ও নানা পোকামাকড়ের সুখী গৃহকোণ। অভিযোগ, ক্লাস চলার মাঝে হঠাৎ বেরিয়ে আসছে সাপ। পড়া ছেড়ে আতঙ্কে আঁতকে উঠছে শিশুরা। ভয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিচ্ছেন অভিভাবকরা। পড়ুয়ারাও আতঙ্কে স্কুলমুখো হতে চাইছে না।

শনিবার ওই স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, একটি ঘরেই চারটি ক্লাসের গুটিকয়েক পড়ুয়াকে নিয়ে পঠনপাঠন চালাচ্ছেন পাঁচজন শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক বিপ্লব কর্মকার বললেন, ‘বিল্ডিংয়ের অবস্থা বেহাল। তৈরির পর থেকে একবারও সংস্কার হয়নি। নোংরা পরিবেশে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। ফলে বাচ্চারা স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছে। ছাত্র হাজিরা ক্রমশ কমছে।’ প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকদেরও অভিযোগ, বিল্ডিং সংস্কারের জন্য বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। ফলে অভিভাবকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদেরকেই। তাই বাধ্য হয়ে স্টাফরুমের মধ্যে পাঁচ  শিক্ষকের নজরদারিতে পঠনপাঠন করানো হয়। তিনটি শ্রেণিকক্ষই বসার অযোগ্য হওয়ায় বাধ্য হয়ে স্টাফরুমেই পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাস চালাতে হচ্ছে। কিন্তু স্টাফরুমেও মাঝেমধ্যে সাপের উপদ্রব দেখা দিচ্ছে। কার্বলিক অ্যাসিড ছড়িয়েও সাপের আনাগোনা কমানো যাচ্ছে না।

এর আগে একাধিকবার পশুপ্রেমী সংস্থার লোকজন স্কুল থেকে সাপ ধরে নিয়ে গিয়ে জঙ্গলে ছেড়েছেন। অভিভাবিকা নমিতা সরকার বলেন, ‘জরাজীর্ণ স্কুল বিল্ডিং। স্যাঁতসেঁতে নোংরা পরিবেশ। সাপ-পোকামাকড়ের উপদ্রব তো হবেই। বাচ্চারা ভয়ে স্কুলে যেতে চাইছে না। কী করব? আমরাও তাই জোর করে পাঠাচ্ছি না। বলা তো যায় না!’

খুদে পড়ুয়া কৌশিক মজুমদার ও রেবা দাসের গলাতেও আতঙ্কের সুর। তাদের কথায়, মাঝেমধ্যেই ক্লাসঘরে সাপ বেরিয়ে পড়ে। খুব ভয় লাগে তখন। স্কুলে আসতে ইচ্ছা করে না।

সব শুনে অবশ্য ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন আলি। তিনি বলেন, ‘দুই-একদিনের মধ্যেই আমি ওই স্কুল পরিদর্শন করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *