বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: ছাগল ঢোকাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশীর গণ্ডগোল। অভিযোগ, সেই ঘটনায় রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় বিজেপি সদস্যের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালাল গ্রামেরই বাসিন্দা এক পুলিশকর্মীর বাড়িতে। ওই পুলিশকর্মীর বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়। শনিবার দুপুরে এমন ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে রায়গঞ্জ থানার বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়াগাঁও গ্রামে। ধারালো ছুরির আঘাতে বাঁ কান কাটা যায় পুলিশকর্মীর বাবার। লোহার রড দিয়ে তাঁর ডান পা ভেঙে দেওয়া হয়। প্রতিবাদ করায় পুলিশকর্মীকেও মারধর করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম বৃদ্ধের নাম ক্ষিতীশ বর্মন (৭০)। পেশায় তিনি হাট ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে ছাগল ঢুকে ভুট্টা খাওয়াকে কেন্দ্র করে যাবতীয় গণ্ডগোলের সূত্রপাত। অভিযুক্তদের সঙ্গে বচসা হয় ওই পুলিশকর্মীর পরিবারের। সেই ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে হাট থেকে ফেরার পথে বাড়ির কিছুদূরে ক্ষিতীশের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। লোহার রড দিয়ে ওই বৃদ্ধকে এলোপাতাড়ি মারধর করার পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর কান কেটে দেওয়া হয়। ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর ডান পা। বাবাকে বাঁচাতে এলে বেধড়ক মার খেতে হয় পুলিশকর্মীকেও। এখানেই শেষ নয়, এরপর ওই বৃদ্ধের বাড়িতে ঢুকে আলমারি ভেঙে টাকাপয়সা, কয়েক বস্তা ভুট্টা লুট করে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
জখম ক্ষিতীশ বলেন, ‘কলা বিক্রি করে হাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির কাছেই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মহেশ্বর দেবশর্মার নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী আচমকা আমার ওপর হামলা চালায়। আমার ছেলে এবং স্ত্রী আমাকে বাঁচাতে এলে তাদেরও বেধড়ক মারধর করা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার কান কেটে দেয়। দুষ্কৃতীদের কয়েকজন বাড়িতে ঢুকে লুটপাট করে। আমাদের চিৎকার চ্যাঁচামেচি শুনে পাড়াপড়শিরা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।’
রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বেশ্বর সরকার বলেন, ‘অভিযোগ দায়ের হয়েছে অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’ অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মহেশ্বর দেবশর্মা বলেন, ‘এটা একটা পারিবারিক গণ্ডগোল। এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনওভাবেই যুক্ত নই। ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’