Raiganj | বহুতল টপকে দক্ষ চুরিতে! রায়গঞ্জে পুলিশের জালে কুখ্যাত ‘স্পাইডারম্যান’

Raiganj | বহুতল টপকে দক্ষ চুরিতে! রায়গঞ্জে পুলিশের জালে কুখ্যাত ‘স্পাইডারম্যান’

শিক্ষা
Spread the love


বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: দড়ি ধরে দেওয়াল বেয়ে মুহূর্তে পৌঁছে যেতে পারেন বহুতলে। ঘরের সামগ্রী লোপাট করে এক বহুতল থেকে অন্য বহুতলে টপকে উধাও হয়ে যান চোখের নিমেষে। আদতে নেশাখোর দাগি চোর। কিন্তু অপরাধ সংঘটিত করার ক্ষেত্রে তাঁর ওই ক্ষিপ্র গতি ও পারদর্শিতার কারণে তিনি এলাকায় ‘স্পাইডারম্যান’ নামে পরিচিত হয়ে গিয়েছেন। সেই কুখ্যাত ‘স্পাইডারম্যান’ এবার পুলিশের জালে। ধৃতের নাম মানিক মহম্মদ।

কয়েকবার নাগালে পেয়েও পুলিশ তাঁকে কবজা করতে পারেনি। গত প্রায় তিন বছর ধরে রায়গঞ্জ শহর ও শহরতলি এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন রায়গঞ্জ থানার হরিগ্রাম সংলগ্ন কাচিমোহার বাসিন্দা মানিক মহম্মদ। তাঁর দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষ তো বটেই, অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল পুলিশও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর অদম্য সাহস ও দড়ি ধরে ক্ষিপ্র গতিতে দেওয়াল বেয়ে বহুতলে উঠে পড়ার বাহাদুরি দেখে বন্ধুরাই তাঁকে খেতাব দিয়েছিলেন ‘স্পাইডারম্যান’। পরবর্তীতে বড়ুয়া ও বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় স্পাইডারম্যান নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন মানিক। তবে স্পাইডারম্যানের মতো ভালো কোনও কাজে নয়, তাঁর ওই বিশেষ দক্ষতাকে তিনি ব্যবহার করছিলেন বহুতলে চুরি সংঘটিত করার কাজে। এলাকায় মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর রোমাঞ্চকর অপরাধমূলক অভিযানের নানা গল্প।

শুধু বাসিন্দাদের নয়, তাঁর ওই স্পাইডারম্যান গোছের স্টান্ট কার্যত ঘুম কেড়ে নিয়েছিল পুলিশেরও। গত তিন বছরে রায়গঞ্জ থানায় মানিকের বিরুদ্ধে একাধিক চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের হয়। অবশেষে শনিবার বিশেষ অভিযান চালিয়ে দাগি অপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত মানিক মহম্মদকে গ্রেপ্তার করল রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক টাকার ব্রাউন সুগার, নগদ প্রায় ৬০ হাজার টাকা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি মোবাইল ফোন। এদিন ধৃতকে রায়গঞ্জ মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন।

রায়গঞ্জ মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সরকারি আইনজীবী নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘ধৃতের বিরুদ্ধে একাধিক চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা সহ মাদক আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। বিচারক তাঁকে জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’

দেওয়াল বেয়ে বহুতলে ওঠার জন্য মানিককে অবশ্য তালিম নিতে হয়নি। জানা গিয়েছে, তাঁর লেখাপড়া পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। বাবা মজুরের কাজে কর্মরত। স্কুল ছেড়ে খুব কম বয়সে মানিক ঢুকে পড়েন নির্মাণশ্রমিকের কাজে। নির্মাণশ্রমিকের পাশাপাশি দড়িতে ঝুলে বহুতল রং করায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন মানিক। মানিকের বন্ধুরা জানিয়েছেন, ওই সময় তিনি কোনওরকম সাহায্য ছাড়াই দেওয়াল বেয়ে বহুতলে ওঠার কৌশল রপ্ত করেন। পরবর্তীতে সেই রংমিস্ত্রি মানিকই রায়গঞ্জ থানার বড়ুয়া ও বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ত্রাস হয়ে ওঠেন। নিজে ব্রাউন সুগার সেবনের পাশাপাশি দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একাধিক গ্রামে ব্রাউন সুগারের কারবার শুরু করে তরুণ সমাজকে ক্রমশ ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। নেশায় আসক্ত তরুণরা মানিকের খপ্পরে পড়লেই নানারকম দুষ্কর্মে জড়িয়ে পড়ে বলেও অভিযোগ।

রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যে সমস্ত দুষ্কৃতী ব্রাউন সুগার বিক্রির পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত, তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *