Raiganj | বস্তির ছেলেমেয়েরা শিখছে ভলিবল, উদ্যোগ রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের প্রাক্তনীদের

Raiganj | বস্তির ছেলেমেয়েরা শিখছে ভলিবল, উদ্যোগ রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের প্রাক্তনীদের

শিক্ষা
Spread the love


দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: বস্তির ছেলেমেয়েদের জন্য পাঠশালা গড়ে তুলেছেন রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের প্রাক্তনীরা। ১৯৭৫-১৯৮০ সাল পর্যন্ত যাঁরা ইউনিভার্সিটি কলেজের পড়ুয়া ছিলেন, তাঁরা চাকরি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর অন্যরকম কোনও কাজ করার তাগিদে এই দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ারের তরফে ফ্রি কোচিং ক্যাম্পের পথ চলা শুরু হয়েছে। রায়গঞ্জ শহরের (Raiganj) কাঞ্চনপল্লি দেশবন্ধু স্পোর্টিং ক্লাবের ভলিবল মাঠ লাগোয়া নিজস্ব কার্যালয়ে প্রতিদিন বিকেলে ছেলেমেয়েদের নিয়মিত ভলিবলের কোচিং দেন শিক্ষক মুকুল রায়। এরপরেই শুরু হয় পঠনপাঠন।

সন্ধ্যা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ফ্রি কোচিং ক্যাম্পে চলে পঠনপাঠন। তবে শুধু পঠনপাঠন নয়, সেইসঙ্গে ছেলেমেয়েদের পঠনপাঠনের সামগ্রী কিনে দেওয়ার পাশাপাশি দেওয়া হয় টিফিন এবং যারা মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে, তাদের ভর্তির ব্যবস্থাও করেন প্রাক্তনীরা। প্রাক্তনীদের মধ্যে রয়েছেন কালিয়াগঞ্জ কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ পীযূষ দাস, বসু বিজ্ঞান মন্দিরের প্রাক্তন অধ্যাপক তাপস ঘোষ, প্রাক্তন শিক্ষক অলোক বিশ্বাস, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নরেশ দাস, গৌরশংকর মিত্র সহ অন্যরা। বস্তিতে বসবাসকারী শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। পাঠশালার দায়িত্বে রয়েছেন বাহিন হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক অলোক বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘এই পাঠশালায় শিশুদের অক্ষরজ্ঞান, সংখ্যাজ্ঞান এবং অন্যান্য মৌলিক বিষয়গুলি শেখানো হয়। তারা যাতে কোনওরকম অসামাজিক কার্যকলাপের মধ্যে নিজেদের যুক্ত না করে সেজন্য খেলাধুলো ও পড়াশোনার মধ্যে তাদের যুক্ত করা হচ্ছে।’ ইতিমধ্যে বস্তির ২০ জন শিশু এই পাঠশালায় এসেছে।

প্রাক্তন অধ্যাপক তাপস ঘোষের মতে, প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার রয়েছে এবং বস্তির শিশুরা এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারে না। তাদের পাঠশালা এই অধিকার নিশ্চিত করতে সাহায্য করছে। সকলকে সমাজের মূলস্রোতে নিয়ে আসা হচ্ছে। শিশুরা যখন শিক্ষা গ্রহণ করে, তখন তারা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে জানতে পারে এবং সমাজে আরও ভালোভাবে মিশে যেতে পারে বলে তিনি জানান। পাঠশালায় নিয়মিত আসে অষ্টম শ্রেণির নেহা পাশমান, বর্ষা পাশমান, মিহির দাস, সপ্তম শ্রেণির অংশু পাশমান, ষষ্ঠ শ্রেণির আরোষী পাশমানরা। এদের মধ্যে নেহার বাবা কুলির কাজ করেন। প্রাইভেট টিউশন দেওয়ার মতো টাকা নেই। নেহার কথায়, ‘এখানে খেলাধুলোর পাশাপাশি পড়াশোনা করি। খুবই ভালো লাগে এখানে।’ আরোষী জানায়, এখানে খেলতেও পারছে আবার পড়তেও পারছে। শিক্ষকেরা টিফিনের ব্যবস্থাও রেখেছেন। তাই কোনও সমস্যা হয় না।

প্রাক্তনী সংগঠনের সম্পাদক পীযূষ দাস বলেন, ‘আমরা সংগঠনের উদ্যোগে পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও  শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। উদ্দেশ্য সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে পিছিয়ে পড়া মানুষদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে একটু এগিয়ে নিয়ে আসা।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *