দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: দশমীর দিন বাংলা জুড়ে যেখানে বিষাদের সুর, সেখানে রায়গঞ্জের খাদিমপুর গ্রামে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি। দশমীর দিন ওই গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা দেবী দুর্গা রূপে বালাইচন্ডীর পুজোয় মেতে ওঠেন। রায়গঞ্জ শহর থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে খাদিমপুর গ্রাম। দশমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে যখন প্রতিমা বিসর্জনের জন্য জোর প্রস্তুতি চলে ঠিক সেই সময় এই গ্রামের বাসিন্দারা পুজোর জন্য মণ্ডপে জমায়েত হন । দীর্ঘদিন এই রীতি মেনেই এই গ্রামে বালাইচন্ডীর পুজো হয়ে আসছে।
খাদিমপুরের দেবী বালাইচন্ডী দশভূজা নন, এখানে তিনি চতুর্ভুজা। চার হাতেই দেবীর অস্ত্র থাকলেও দেবীর পদতলে নেই মহিষাসুর। তবে অন্যান্য দূর্গামূর্তির মতো এখানেও দেবী কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী নিয়ে সপরিবারে বিরাজমান। খাদিমপুরের পুজো কমিটির সদস্য সুরেশচন্দ্র বর্মণ বলেন, এলাকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই জানেন না কতবছর ধরে এই গ্রামে পুজো হচ্ছে। তবে তাঁরা কয়েক প্রজন্ম ধরে এই পুজো করে আসছেন। দশমীর দিন থেকে পুজো শুরু হয়। আগামীকাল নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো ও শনিবার মেলা হবে ।
বিশ্বকর্মা পুজোর পরদিন গত বছরের প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। এরপর প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়। পুজো কমিটির আরেক সদস্য তারা বর্মণ বলেন, ‘রাত ১২ টায় পুজো শেষ হওয়ার পপ পাঁঠাবলির পাশাপাশি পায়রা বলি হবে। তবে পুজোয় কোনো খিচুড়ি ভোগ হয় না। ফল-মূল দিয়ে পুজো হয়। একজন পুরোহিতের পাশাপাশি থাকেন একজন তান্ত্রিক।’
আয়োজক কমিটির সম্পাদক রবেন বর্মণ বলেন, ‘বলাইচন্ডীরূপী দেবীর মায়ের পুজো খাদিমপুরের মানুষদের কাছে আসল দুর্গাপুজো। এই পুজোকে কেন্দ্র করে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন বাসিন্দারা। বিশেষ করে গ্রামের মহিলারা এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। গ্রামে ৩৫০টি পরিবারের মধ্যে ৩০০টি পরিবার উপবাস রয়েছেন। রাতে পুজো হওয়ার পর ফল খেয়ে উপবাস ভাঙবেন।’