উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক : ‘চিনের পিঠে চেপে’ ২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদে পাড়ি দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে পাকিস্তান। চাঁদে মহাকাশযান পাঠানোর কথা ভাবছে ইসলামাবাদ। এই অভিযানে আর্থিক ও প্রযুক্তগত দিক থেকে পূর্ণ সহায়তা করবে চিন। এজন্য দু’দেশের মধ্যে প্রাথমিক স্তরে আলোচনা চলছে বলে দাবি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে। দেনায় ডুবে থাকা অর্থনীতি, সন্ত্রাসবাদ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত দেশটির চাঁদের মাটি ছোঁয়ার আকাঙ্খা আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শেষ পর্যন্ত অভিযানে পাকিস্তান কতটা সাফল্য পায়, সেদিকে নজর সকলের। প্রসঙ্গত, দু‘বছর আগেই সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছেন ভারতের বিক্রম ল্যান্ডার।
বর্তমানে বিজ্ঞান ও কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য বেজিং সফরে রয়েছেন পাক সরকারের মন্ত্রী আহসান ইকবাল। সোমবার চিনের মহাকাশ সংস্থার প্রধান শান ঝংদে সহ উচ্চপদস্থ চিনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বিষয়টি ঘোষণা করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের মহাকাশ সংস্থা সুপারকোকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ ইসলামাবাদকে যাবতীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ঝংদে।
তবে আশ্চর্যের বিষয়, সংস্থাটি কখনও স্বাধীনভাবে কোনও উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেনি, মহাকাশ অভিযান তো দূর অস্ত! স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে পারমাণবিক প্রযুক্তি, বেজিং ইসলামাবাদকে সমস্তরকমভাবে সাহায্য করে চলেছে। পাকিস্তানের প্রতিটি মহাকাশ অভিযান চিনা সহায়তায় পরিচালিত হয়েছে। গত মাসেই জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলার উদ্দেশ্যে একটি রিমোট-সেন্সিং স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছিল ইসলামাবাদ। এটিতে পাকিস্তানের পতাকা থাকলেও, প্রযুক্তি ছিল চিনের। আহসান ইকবাল সম্প্রতি জানিয়েছেন, চিনের সহায়তায় পাকিস্তানে তৈরি তিনটি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো হয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে চিনের মহাকাশ স্টেশনে নভোচর পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা।
১৯৬১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নোবেল জয়ী ডঃ আবদুস সালামের নেতৃত্বে পাকিস্তান তার আনুষ্ঠানিক মহাকাশ কর্মসূচি চালু করে। তিনি স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশন (SUPARCO) প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬৪ বছর পরও স্বনির্ভরতা অর্জন করতে পারেন পাক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। প্রযুক্তির জন্য তাদের আজও চিনের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে। SUPARCO-র নেতৃত্বে অভিজ্ঞ বিজ্ঞানীদের পরিবর্তে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক জেনারেলরা রয়েছেন, যার ফলে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও সংস্থার পরিচালনায় খামতি থেকে যাচ্ছে। এসবের জেরে আরও বেশি করে চিনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে সংস্থাটি।