ঘোকসাডাঙ্গা: ফের অসম থেকে এনআরসি-র নোটিশ এল কোচবিহারের মাথাভাঙ্গা ২ ব্লকের লতাপাতা এলাকার এক বাসিন্দার কাছে। নোটিশ পাওয়ার পর ওই প্রবীণ ব্যক্তি তাঁর কাগজপত্র নিয়ে অসমে গিয়ে জমির দলিল সহ বেশকিছু প্রমাণপত্র দেখান। কিন্ত কর্তৃপক্ষ সেই কাগজে সন্তুষ্ট নয়। আর তাতেই চিন্তা বাড়ছে নিশিকান্ত দাসের। এব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবলু বর্মনের কথায়, ‘আমার বিষয়টি জানা নেই। আমরা দলের পক্ষ থেকে এখনই খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। আমরা ওই ব্যক্তির পাশে আছি।’
কোচবিহার জেলার দিনহাটার বাসিন্দা উত্তম কুমার ব্রজবাসীর কাছে ফরেনার ট্রাইবুনাল থেকে এনআরসির নোটিশ আসে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। এমনকি একুশে জুলাই ধর্মতলার মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত করানো হয় উত্তম কুমার ব্রজবাসীকে। আর সেখান থেকেই এর প্রতিবাদে আন্দোলনের বার্তা দেন দলের সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। আর তারই মাঝে কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা ২ ব্লকের লতাপাতা গ্রাম পঞ্চায়েতের লতাপাতা এলাকার এক সত্তোর্ধ ব্যাক্তির কাছে নোটিশ আসার খবর প্রকাশ্যে এল।
জানাগেছে মাথাভাঙ্গা ২ ব্লকের লতাপাতা এলাকার নিশিকান্ত দাস(৭২)এর কাছে ফরেনার ট্রাইব্যুনাল থেকে নোটিশ এসেছে। পেশায় তিনি খুচরা ডিম বিক্রেতা। বাড়ি বাড়ি থেকে ডিম সংগ্রহ করে সেই ডিম বিক্রি করে কোনওভাবে তাঁর সংসার চলে। এনআরসির নোটিশ প্রসঙ্গে নিশিকান্ত জানান, প্রায় ২৮ থেকে ৩০ বছর আগে কাজের সন্ধানে তিনি অসমে গিয়েছিলেন। সেখানে এয়ারপোর্ট সংলগ্ন ভিআইপি চৌপথি এলাকা থেকে অসম পুলিশ তাকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তিনি যার অধীনে কাজে গিয়েছিলেন তিনি থানায় গিয়ে জানায় নিশিকান্ত দাস বাংলাদেশি নন। তিনি কোচবিহার জেলার বাসিন্দা। তারপর সেইসময় তিনি বাড়িতে এসে সব কাগজপত্র নিয়ে অসমে গিয়ে কাগজপত্র দেখান। অসম পুলিশ তারপর তাঁকে ছেড়ে দেয়। প্রায় ছয়মাস কাজ করার পর অসমে কাজ ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন নিশিকান্ত। গত নয় বছর আগে তার স্ত্রী রাধারানী দাসের মৃত্যু হয়। তাঁর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। প্রায় দেড় দুমাস আগে তাঁর কাছে ফরেনার ট্রাইব্যুনাল থেকে এনআরসি-র নোটিশ আসে। তারপর তিনি ১৯৬০ সালের জমির কাগজপত্র ও বিভিন্ন প্রমাণপত্র নিয়ে অসমে যান। সব কাগজপত্র দেখার পরেও সন্তুষ্ট নয় ফরেনার ট্রাইব্যুনাল কর্তৃপক্ষ। সেইসময়ের ভোটার লিস্ট ও তাঁর বাবার পরিচয়পত্র চান। সেসব নথি সঙ্গে না থাকায় তিনি নিরাশ হয়ে বাড়ি ফেরেন। আর তার আরও অভিযোগ বাবা দেবেন্দ্র চন্দ্র দাস প্রায় ৪৫ বছর আগে মারা গেছেন। এখন তার বাবার এসব কাগজপত্র জোগার করবেন কীভাবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন।
এব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবলু বর্মনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি আমাদের কাছে নিশিকান্ত দাস এখনও জানায় নি। আমরা দলগত ভাবে খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমরা ওই ব্যাক্তির পাশে আছি। তাঁর দাবি, বাংলাভাষা বলা টাই কি অপরাধ। বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলোতে বাঙালিদের যেভাবে হয়রানি করছে বিজেপি।আমরা এর প্রতিবাদে আন্দোলনে আছি।