রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: ১৫০ কোটি খরচে তৈরি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সুপারস্পেশালিটি ব্লকের ভোগান্তি যেন পিছু ছাড়ছে না (NMBCH)। ফলস সিলিং বিপর্যয়ের পর এবার সামনে এসেছে ছাদ চুইয়ে জল পড়ার ঘটনা। আর এর ফলেই সুপারস্পেশালিটি বিভাগে অন্তর্বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার (ওটি) চালু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে।
বৃষ্টি হলেই সুপারস্পেশালিটি ব্লকের ছাদ চুইয়ে জল পড়ে। বিষয়টি সামনে আসতেই ছাদ মেরামতির জন্য কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে একাধিকবার জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিকের কথায়, ‘একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছি। শুনেছি, এজেন্সি এসে দেখেও গিয়েছে। দ্রুত কাজ শুরুও হবে বলে শুনেছি। কিন্তু কবে হবে তা এখনও বুঝতে পারছি না।’ সুপার জানিয়েছেন, ছাদ দিয়ে জল পড়ায় ওপরতলার ওটিগুলি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
২০২২ সালে সুপারস্পেশালিটি ব্লকের হস্তান্তর নেয় মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেখানে কয়েকটি বহির্বিভাগ এবং কার্ডিওলজি অন্তর্বিভাগ, করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) চালু করা হয়। ইউরোলজি বিভাগ, সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরি চালু করার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু নতুন তৈরি হওয়া ভবনের ফলস সিলিং খুলে পড়ার পর এবার ছাদ চুইয়ে জল পড়ার ঘটনা সামনে এসেছে। আর এতেই ওটি রুম বন্ধ থাকার পাশাপাশি এসব বিভাগ চালু হওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর মাসে এই ঘটনা সামনে এসেছে। ছাদ চুইয়ে ছ’তলা ভবনের ওপরতলায় থাকা ওটি রুমগুলিতে জল ঢুকতে দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় ওপরতলায় থাকা কোনও ওটিতেই সরঞ্জাম বসানো যাচ্ছে না। জানা গিয়েছে, এই ঘটনা নজরে আসার পরেই পূর্ত দপ্তর একটি রিপোর্ট তৈরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়। কলকাতায় স্বাস্থ্য ভবনেও সেই রিপোর্ট পাঠানো হয়।
এরপর স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ মেনে সুপারস্পেশালিটি ব্লকের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। এর পরেই দ্রুত এই ব্লকের ছাদ মেরামতির জন্য কেন্দ্রের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। পাশাপাশি মেডিকেল কলেজের তরফে স্বাস্থ্য ভবনেও চিঠি পাঠিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের আর্জি জানানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ছাদ মেরামতের কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের উচ্চপদস্থ বাস্তুকার সৌরভ ওঝার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের সুপারস্পেশালিটি ব্লকের ছাদ মেরামতির জন্য এজেন্সিকে বলে দেওয়া হয়েছে। ওই এজেন্সি এই মাসেই কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু এখনও কাজ শুরু করেনি। আমরা আরও একবার ওই এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’