শিলিগুড়ি: ফের বন্ধ হয়ে গেল সিকিম-বাংলা সংযোগকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের। পুজো পর্যটন নিয়ে সংশয়ের মধ্যে স্বাধীনতা দিবসেও পর্যটক হারাল সিকিম। টানা তিনদিনের ছুটিতে প্রাকপুজো পর্যটনে কিছুটা হলেও পর্যটক পাওয়া যাবে বলে আশায় ছিল পাহাড়ি রাজ্যটির পাশাপাশি কালিম্পং। কিন্তু ওই আশায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জল ঢেলে দেয় কেন্দ্রীয় সড়ক সংস্থা ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল)। এদিন রাত ৮টা থেকে ১৫ অগাস্ট সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের সেবক থেকে চিত্রে পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সড়ক সংস্থাটি। পথ সুরক্ষায় নজর দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান এনএইচআইডিসিএলের জেনারেল ম্যানেজার (পিএমইউ-শিলিগুড়ি) রাহুলকুমার গুপ্তা।
এদিকে, স্বাধীনতা দিবস পালনে ১৫ অগাস্ট সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কালিম্পং শহরে কোনও ধরনের যান প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। ফলে কালিম্পং শহর হয়ে যে শিলিগুড়ি-সিকিম গাড়ি চলাচল করবে, সে উপায় নেই। সবমিলিয়ে উৎসবের আনন্দ ফিকে হতে চলেছে পাহাড়ে, সড়ক-যন্ত্রণায়।
সাতসকালে লিকুভিরে ধস নামতেই নতুন করে রাস্তা বন্ধের আশঙ্কা দানা বেঁধেছিল। দুপুরে পণ্যবাহী গাড়িতে নিষেধাজ্ঞা জারি হতেই, জাতীয় সড়কটি যে বন্ধ হতে চলেছে, সে ব্যাপারে অনেকেই নিশ্চিত হয়ে যান। সন্ধ্যায় ওই আশঙ্কাকে সত্যি করে নিষেধাজ্ঞা জারি করে এনএইচআইডিসিএল। শ্বেতিঝোরায় পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরির পর ওখানে একমুখী যান চলাচল শুরু হওয়ায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে কিছুটা হলেও পর্যটক পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠেছিল সিকিম এবং কালিম্পং। কারণ, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ১৫ অগাস্ট শুক্রবার ছুটি। পরবর্তী দু’দিন শনি ও রবিবারও ছুটি। টানা তিনদিনের ছুটিতে পর্যটকরা পাহাড়ে আসার ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাবেন বলে আশায় ছিলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কালিম্পংয়ের পরিবহণ ব্যবসায়ী সুখবীর লেপচা বলেন, ‘পর্যটকরা আসছেন না। এরপর আমাদের না খেয়ে থাকা ছাড়া সামনে কোনও পথ নেই। কেন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিনের পর দিন বন্ধ রাখা হচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না।’ গ্যাংটকের হোটেল ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদ বলছেন, ‘পুজোর বুকিং নেই। রাস্তাটি চালু হওয়ায় একটু হলেও আশায় ছিলাম। কিন্তু ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হল।’ মাঝে মাঝে বন্ধ না রেখে প্রয়োজনে টানা ১৫ দিন বন্ধ রেখে রাস্তাটির স্থায়ী মেরামতের দাবি তুলছেন সিকিমের পাশাপাশি কালিম্পংয়ের বাসিন্দারা।