সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: ২৪ ঘণ্টা পরেও চাপা উত্তেজনায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (NBMCH)। নতুন করে বুধবারের মতো হাতাহাতির ঘটনা না ঘটলেও বৃহস্পতিবারও পড়ুয়াদের দুই পক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড়। একপক্ষ ডিনের পাশে দাঁড়িয়ে হাসপাতাল সুপারকে স্মারকলিপি দেয়। অন্যপক্ষ আবার পালটা পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে ডিনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি ডিনের পক্ষ নেওয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের মারধর করার অভিযোগ তুলেছে। সবমিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের দুই পক্ষের বিবাদ চরমে
ডিন ডাঃ অনুপম নাথ গুপ্তা বৃহস্পতিবার মেডিকেলে আসেননি বটে, কিন্তু ইন্টার্ন সানি মান্নাকে তাঁর শোকজ করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবারও নিজেদের শক্তি জাহির করার চেষ্টা করল দুই পক্ষ। ৯ মার্চ লেকচার থিয়েটার ৪০০-তে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল খেলা দেখানোর ঘটনায় ইন্টার্ন সানিকে শোকজ করেন ডিন। যাকে কেন্দ্র করে বুধবার উত্তেজনা ছড়ায় মেডিকেলে। হাতাহাতিতে জড়ায় দুই পক্ষ। ডিনকে ঘেরাওমুক্ত করে মাটিগাড়ার থানার পুলিশ। এদিনও রয়েছে তার রেশ। যথারীতি এদিন মেডিকেলে পা রাখেননি ডিন। না আসার কারণ নিয়ে টেলিফোনে ডিন বলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে অফিসে যাইনি। আর কোনও কথা বলতে পারছি না।’ একটি সূত্রে খবর, দুপুরে মাটিগাড়া থানায় যান ডিন। তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল, ডিনের ঘরের বাইরে থাকা নেমপ্লেট উধাও হয়ে গিয়েছে। ঘটনার পিছনে কাদের হাত রয়েছে, তা অস্পষ্ট।
এদিন সকালে মেডিকেল স্বাভাবিক থাকলেও পরীক্ষা শেষে আসরে নামে দুই পক্ষ। ডিনের পাশে দাঁড়ানো পড়ুয়াদের পক্ষে সার্জারি বিভাগের হাউস স্টাফ শাহাদত ইসলাম বলেন, ‘ডিনকে যারা হেনস্তা করেছে বা মেডিকেলের শান্তি বিঘ্নিত করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ যাতে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেয়, তার জন্য সুপারকে স্মারকলিপি দিয়েছি। শোকজ কোনও শাস্তি নয়। ডিনের সঙ্গে কথা বললেই হত।’ অন্যদিকে, ডিনের বিপক্ষে থাকা পড়ুয়ারা অধ্যক্ষের ঘরের বাইরে বিক্ষোভ দেখায়। ডাঃ রনিত সাঁই বলেন, ‘সানি যুক্ত নয়, তবে কেন জবাব দিতে যাবে? কালকে মেয়েদের মারধর করা হলেও ডিন ম্যাডাম পাশে দাঁড়াননি।’ তাঁর অভিযোগ, ‘ডিনের মেয়ে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী তিনি পরীক্ষা ব্যবস্থায় থাকতে পারেন না। কিন্তু বুধবার আন্দোলনের মাঝে ডিন বারবার পরীক্ষা ব্যবস্থার কথা বলেছেন।’ পড়ুয়াদের তোলা অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে ডিনকে বিকালে ফোন করা হলে উত্তরবঙ্গ সংবাদের নাম শুনে ফোন কেটে দেন তিনি। হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘পরীক্ষার জন্য আলাদা একটি টিম থাকে। পরীক্ষা পরিচালনা হল ইনচার্জের কাজ।’ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার অধ্যক্ষর সঙ্গে কথা বলবেন বলে তিনি জানান।