বাগডোগরা: আর ক’দিন পরই দোল। সকলে মাতবেন রংয়ের উৎসবে। সেই মতো চলছে কেনাকাটা। তবে মানুষ এখন অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে চাহিদা বেড়েছে ভেষজ আবিরের (Natural Holi Colors)। দোকানে গিয়ে অনেকেই খোঁজেন রাসায়নিকমুক্ত আবির বা রং। সেকথা মাথায় রেখে বন বিভাগের নন-টিম্বার ফরেস্ট প্রোডিউস ডিভিশন (এনটিএফপিডি)-এর তরফে ভেষজ আবির তৈরি করা হত অন্য বছর। কিন্তু এ বছর তা হচ্ছে না। একাজে যুক্ত কর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে এবার উপকরণ পাঠানো হয়নি। সেকারণে তাঁরা ভেষজ আবির তৈরি করতে পারেননি। কেন এমন হল, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি এনটিএফপিডির রেঞ্জ অফিসার শুভজিৎ মিত্র।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর প্রায় ৬ কুইন্টাল ভেষজ আবির তৈরি করা হয়েছিল। ভালো মানের ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে বেলপাতা, গাঁদাফুলের পাপড়ি চূর্ণ করে মিশিয়ে ভেষজ আবির প্রস্তুত করা হয়। এটা মানব শরীরের কোনও ক্ষতি করে না। অন্য বছর বনজের শিলিগুড়ির হাকিমপাড়া, জলপাইগুড়ি, লাটাগুড়ি, গয়েরকাটা, নীলপাড়া, সুকনা এবং ব্যাংডুবির বিপণনকেন্দ্রে এই আবির পাওয়া যায়। যা বিক্রি করে লক্ষ্মীলাভ হয় বন দপ্তরের। কিন্তু এবছর তা মিলবে না। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কেন আবির তৈরি করা হল না, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্রেতারাই।
অঞ্জনকুমার ভঞ্জ নামে এক ক্রেতা এদিন ব্যাংডুবির বিপণনকেন্দ্রে আবির কিনতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘বাজারের অধিকাংশ রংয়ে রাসায়নিক থাকে। এজন্য আমি প্রতিবছর ভেষজ আবির কিনি। শুনলাম এবছর উৎপাদন বন্ধ। এসে হতাশ হতে হল।’
ব্যাংডুবির উৎপাদনকেন্দ্রের কর্মী ধরণী রায়ের বক্তব্য, ‘আবির তৈরির কোনও উপকরণই তো পাঠানো হয়নি। তাই আমরা হাত গুটিয়ে বসে আছি।’
এনটিএফপিডির রেঞ্জ অফিসার শুভজিৎ মিত্র বলেছেন, ‘এবছর ব্যাংডুবির এনটিএফপিডির উৎপাদনকেন্দ্রে ভেষজ আবির প্রস্তুত করা হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না, এবিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।’ তবে তাঁর সংযোজন, ‘এই বিভাগের তদারকির দায়িত্বে থাকা ডিএফও গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসর নিয়েছেন। অন্য বিভাগের ডিএফও অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন।’ তিনি এমন কথা বললেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বনকর্তা বলেছেন, ‘ফান্ড না মেলায় এবার ভেষজ আবির উৎপাদন করা যায়নি। এতে আর্থিক ক্ষতি হল।’