উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে সংসদের উভয় কক্ষে তুমুল হট্টগোল অব্যাহত। এই বিল অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী সহ যেকোনও মন্ত্রী যদি গুরুতর অপরাধের অভিযোগে টানা ৩০ দিন আটক থাকেন, তবে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। এই বিল পেশ করার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তবে এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর এক মন্তব্যে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে, যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই এই বিল থেকে প্রধানমন্ত্রী পদকে বাদ রাখার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে যখন এই বিলটি নিয়ে আলোচনা চলছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী পদকে এর আওতা থেকে বাদ রাখার একটি প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু মোদি নিজে সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। রিজিজু বলেন, মোদি স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, “আমার জন্য কোনও ব্যতিক্রম নয়।” প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য তাঁর দৃঢ় নৈতিক অবস্থানকে তুলে ধরে বলে রিজিজু জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীও একজন সাধারণ নাগরিক এবং তাঁর কোনও বিশেষ সুরক্ষার প্রয়োজন নেই। দল-নির্বিশেষে এই আইন সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা-র পেশ করা এই বিলে বলা হয়েছে, যদি কোনও মন্ত্রী পাঁচ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডের যোগ্য এমন কোনও অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে ৩০ দিনের বেশি পুলিশি হেপাজতে থাকেন, তাহলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৩১ তম দিন থেকে মন্ত্রিত্ব হারাবেন। সরকার এই পদক্ষেপকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি বড় লড়াই বলে বর্ণনা করছে। অমিত শাহ সংসদে বলেছেন, “আমরা এত নির্লজ্জ হতে পারি না যে, অভিযোগের মুখেও সাংবিধানিক পদে বসে থাকব।”
অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলো এই বিলকে “গণতন্ত্রবিরোধী” এবং “অসাংবিধানিক” বলে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই বিলের অপব্যবহার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলোতে সরকার ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। বুধবার বিল পেশের সময় বিরোধীরা সংসদের কক্ষে বিলের কপি ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান।সংসদের তীব্র হট্টগোলের জেরে এই বিলটি এখন একটি যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে, যেখানে এটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও পর্যালোচনা করা হবে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিলটির চূড়ান্ত রূপ নির্ধারিত হবে।