নাগরাকাটা: সামনেই বোনের বিয়ে। আর সেই উপলক্ষেই মেটেলি বাজারের বাসিন্দা বীরেন্দ্র মঙ্গর তাঁর স্ত্রী গঙ্গা মঙ্গরকে(৩১) নিয়ে বিয়ের নিমন্ত্রণ করতে বাইকে চেপে আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথে হাতির হামলায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে শিবচুর জঙ্গল ঘেরা রাস্তায়। এই বিষয়ে চালসার রেঞ্জার প্রকাশ থাপা বলেন,‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। পরিবারটি যাতে ক্ষতিপূরণ পায় সেই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।’ উল্লেখ্য, বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন(বিআরও)-এর তরফে কিছু দিন আগেই এই রাস্তাটিকে চওড়া করে নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, স্ত্রীকে নিয়ে বীরেন্দ্র এদিন খুনিয়াবস্তি ও নাগরাকাটা এলাকায় নেমতন্ন সেরে গৈরিবাসের এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। শিবচু থেকে প্রায় দু কিলোমিটার আগে হঠাৎ একটি দলছুট হাতি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, দ্রুতগতিতে বাইক নিয়ে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। প্রাণ বাঁচাতে কোনওরকমে বাইক থামিয়ে দুজনে দৌড়তে শুরু করেন। বীরেন্দ্র রক্ষা পেলেও হাতিটি তাঁর স্ত্রীকে নাগালের মধ্যে পেয়ে সেখানেই তাঁকে পিষে দেয়। খবর পেয়ে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। মৃতদেহ উদ্ধার করে নাগরাকাটা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। স্ত্রীর এমন অকাল প্রয়াণে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন বীরেন্দ্র। এই প্রসঙ্গে বীরেন্দ্রর এক আত্মীয় বলেন, ‘ওঁদের বাড়িতে এখন বিয়ের পরিবেশ। কিন্তু সেই পরিবেশ যে এভাবে শোকের পরিবেশে বদলে যেতে পারে তা ভাবতেই পারছি না।’ জানা গিয়েছে, গঙ্গা আদতে সামসিং চা বাগানের ইয়ংটংয়ের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি অত্যন্ত হাসিখুশি ও নম্র স্বভাবের ছিলেন বলেও জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
অপরদিকে শিবচুর স্থানীয় বাসিন্দারা এও জানিয়েছেন যে, বেশ কিছুদিন ধরেই সেখানে হাতির অত্যাচার চরমে উঠেছে। এর আগে ওই রাস্তাতেই এক ভবঘুরের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেটাও হাতির হামলায় বলে অনেকের ধারণা। সম্প্রতি শিবচুর সরকারি প্রাথমিক স্কুলও লন্ডভন্ড করে দেয় দু থেকে তিনটি হাতির দল।