নাগরাকাটাঃ গরমে কাহিল ডুয়ার্স সহ গোটা উত্তরবঙ্গ। বুধবার বিকেলের পর থেকে শিলিগুড়ি সহ ডুয়ার্সের বৃষ্টির কারণে গরমের তীব্রতা কমেছে অনেকটাই। কিন্তু গত দুদিনের এমনকী আজ দুপুর পর্যন্ত গরমের তীব্রতায় বেশ কয়েকজন পড়ুয়ার অসুস্থ হওয়ার খবর মিলেছে।
জানা গিয়েছে, অস্বাভাবিক গরমে ক্লাস রুমেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে খুদেরা। গরমের কারণে গাছতলায় বসেই চলছে পঠনপাঠন। গতকাল স্কুল ছুটর পর ট্রাকে ঠাসাঠাসি হয়ে বাড়ি ফেরত যাওয়ার পথে গাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে নাগরাকাটার বামনডাঙ্গা চা বাগানের ৩ ছাত্রী। মঙ্গলবারের মত বুধবারও পড়ুয়াদের গরমে কাহিল হয়ে পড়ার একই দৃশ্য দেখা গেল গোটা জলপাইগুড়ি জেলা জুড়েই। চরম অস্বস্তির এমন আবহে জেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষা সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকরা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে আপাতত স্কুল যাতে সকালে সকালে এগিয়ে আনা হয় এমন আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। ডিআই (প্রাথমিক) শ্যামল চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকেও এদিন উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পরিস্থিতি জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নির্দেশ মোতাবেক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ এদিকে এখনও কেন স্কুলগুলিকে সকালে এগিয়ে আনা হল না এই প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অভিভাবক থেকে শুরু করে শিক্ষক সংগঠনগুলিও।
মঙ্গলবার বিকেল ৪ টা নাগাদ বামনডাঙ্গা চা বাগানের এক ট্রাক বোঝাই ছাত্রছাত্রী স্কুল সেরে বাড়ি ফিরছিল। প্রত্যেকেই নাগরাকাটা হিন্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। প্রতিদিন এভাবেই পণ্যবাহী গাড়ি চেপে তাঁদের যাতায়াত। বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে সুলকাপাড়ায় নবম শ্রেণীর দু জন ও অষ্টম শ্রেণীর ১ জন পড়ুয়া জ্ঞান হারায়। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য পড়ুয়া ও স্থানীয়রা তাঁদের সুলকাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসে। ৩ জনের সেখানেই চিকিৎসা শুরু হয়। দু জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও এক ছাত্রীকে ভরতি করে নেওয়া হয়। ৩ জনের বাড়ি বাগানটির মডেল ভিলেজ ও ডায়না লাইনে।
স্কুলের টিআইসি মনোহর সুরি বলেন, ‘বামনডাঙ্গা থেকে প্রতিদিন একটি ট্রাক দু বার সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আসে। যেভাবে ওঁদের যাতায়াত তা অত্যন্ত কষ্টকর। বিষয়টি বাগান কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত বলে মনে করি।’ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা কমিটির সভাপতি অঞ্জন দাস বলেন, ‘গরমে পড়ুয়াদের সমস্যার বিষয়টি যথাস্থানে জানানো হয়েছে।’ এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝা বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে এখানে যাতে অন্তত ১৫ দিন সকালের শিফটে স্কুল এগিয়ে আনা হয় এমন দাবির কথা শিক্ষা দপ্তরকে জানানো হয়েছে। দুঃখের কথা কারও কানে কোনও কথা ঢুকছে না।’