উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেড় বছরের শিশুকন্যাকে হত্যা করে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন বাবা। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার দেবীদাসপুরে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিশ দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে দেড় বছরের কন্যা সন্তানকে খাইয়ে, ঘুম পাড়িয়ে উঠোনে কাজ করছিলেন মা সুলেখা খাতুন। সেই সময় ঘরেই ছিলেন শিশুকন্যার বাবা নইম। হঠাৎই ঘরের ভিতর থেকে মেয়ের আচমকা চিৎকারের আওয়াজ পান সুলেখা। আওয়াজ শুনে সুলেখা দৌড়ে ঘরে গিয়ে দেখেন মেয়ে মাটিতে পড়ে আছে। এরপরেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় নইম।
এদিকে ঘরের মেঝেতে মেয়ের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন সুলেখা। ছুটে আসেন পাড়ার লোকেরা। সামশেরগঞ্জের ডাকবাংলো মোড়ের কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই শিশুকন্যাকে। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই শিশুকন্যার।
ওই শিশুকন্যার দাদু মহম্মদ সোহরব বলেন, ‘বহরমপুরের হাসপাতালে নাতনির চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকার সময়ে শুনতে পাই নইম চসকাপুর মোড়ের কাছে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়েছে।’
সোহরব জানান, নইম বিড়ির ব্যবসা করতেন। তিন বছর আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে। তাঁদের এক কন্যাসন্তান হয়। বিয়ের পরে অতিরিক্ত নেশা করার কারণে জামাইকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসাও করানো হয়। এর মধ্যে জামাইয়ের ব্যবসা তাঁর ভাই দখল করে নেন। বর্তমানে নইম কোনও কাজ করতেন না। ফলে মানসিক অবসাদে ভুগতেন। মদ খেয়ে মেয়ের উপরে রীতিমতো অত্যাচার করতেন নইম। এমনকী মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে দ্বিতীয় বিয়েরও পরিকল্পনা ছিল। তাই মেয়েকে মেরে পথের কাঁটা দূর করতে চেয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, শিশুকন্যার দেহ সোমবার মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ মর্গে ময়নাতদন্ত হচ্ছে। এর পাশাপাশি জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নইমের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে।
ফরাক্কার এসডিপিও শেখ সামসুদ্দিন বলেন, ‘শিশুকন্যাকে খুন করার পরে আত্মগ্লানিতে নইম আখতার নামে এক ব্যক্তি নিজেও ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।’