মুম্বই: ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত। প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটা জয়। সেখান থেকে জোড়া জয় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। হার্দিক ব্রিগেডের টিমগেমের সামনে বৃহস্পতিবার দাঁড়াতে পারেনি প্যাট কামিন্সের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ব্যাটে-বলে উইল জ্যাকসের পারফরমেন্স, রোহিত শর্মার রানে ফেরার চেষ্টা, জসপ্রীত বুমরাহ-ট্রেন্ট বোল্টের নিয়ন্ত্রিত বোলিং—চলতি লিগে এখনও পর্যন্ত সেরা ম্যাচ মুম্বইয়ের।
হায়দরাবাদের বিস্ফোরক ব্যাটিংকে ১৬২/৫–এ আটকে রাখার পর ১১ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয় মুম্বইয়ের। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের দ্বৈরথে শুধু ব্যাটবলের টক্কর নয়, আবেগের স্রোতও দেখা গেল। আবেগের নাম ঈশান কিষান, মুম্বই সংসারের প্রাক্তন ‘পকেটসাইজ ডিনামাইট’। নিজের একদা ‘দ্বিতীয় হোম’ ওয়াংখেড়েতে প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ২ রানের বেশি করতে পারেননি ঈশান।
রান না পেলেও ফিরলেন ভালোবাসা, স্নেহ, আদর নিয়ে। ম্যাচের পর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মালকিন নীতা আম্বানির সঙ্গে দেখা করেন বাহাঁতি ব্যাটার। পুত্রসম ঈশানকে স্নেহের আদরে ভরিয়ে দেন। গালে হাত দিয়ে আদরে বুঝিয়ে দেন, জার্সি বদল হলেও ঈশান এখনও তাঁদের হৃদয়েই রয়েছেন। মুম্বই অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া সেখানে বড়ভাইয়ের ভূমিকায়। আউট হয়ে ফেরা ঈশানকে সান্ত্বনা দিলেন।
মুম্বই থেকেই ঈশানের উত্থান, ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিতি। ৭ বছরের যে সম্পর্কে ছেদ পড়ে এবার। গতকাল প্রিয় ওয়াংখেড়েতে নেমেছিলেন হায়দরাবাদের জার্সিতে। একদা আরবসাগরের কোলের এই মঞ্চে ম্যাচ জেতানো একাধিক ইনিংস খেলেছেন। লক্ষ্য ছিল তেমনই কিছু করে দেখানোর। কিন্তু উইল জ্যাকসের বলে লক্ষ্যচ্যুত।
সূর্যকুমার যাদব আবার অভিষেক শর্মার পিছনে পড়েন। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ট্র্যাভিস হেডের সঙ্গে কিছুটা সাবধানি শুরু অভিষেকের। ইনিংসের মাঝেই সূর্যকে দেখা যায় অভিষেকের পকেট চেক করছে। আগের ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ১৪১ রানের বিস্ফোরক ইনিংসের মাঝে সেঞ্চুরির পর সমর্থকদের উদ্দেশে লেখা চিরকুট তুলেও ধরেন।
সূর্য মজা করেই দেখতে চান, এদিনও মুম্বই বোলারদের ছাতু করে তেমনই কিছু করার ইচ্ছে আছে কি না? ওভারের মাঝেই অভিষেকের পকেটে হাত ঢোকাতে দেখা যায়। যা নিয়ে অভিষেক, পাশে থাকা হার্দিকরা হেসে লুটোপুটি। শেষপর্যন্ত তেমন কিছু হয়নি। ২৮ বলে ৪০ রানে থামতে হয় অভিষেককে। পকেট থেকে বেরোয়নি কোনও চিরকুটও।
জোড়া জয়ের খুশি নিয়ে হার্দিক আবার উইল জ্যাকসে মজে। ঈশান কিষান, ট্র্যাভিস হেড, জোড়া বিগ উইকেটের সঙ্গে ৩৬ রানে ম্যাচের সমীকরণ বদলে দেন। হার্দিকের মতে জ্যাকস যথার্থ অর্থে থ্রি-ডি প্লেয়ার। চাপের মুখে বল করতে প্রস্তুত। জানে ব্যাটে ঝড় তুলতে। সঙ্গে বিদ্যুৎগতির ফিল্ডিং। এই কারণে দলে জ্যাকস।
এদিকে, হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে নামার সঙ্গে সঙ্গে নয়া নজির রোহিত শর্মার। আইপিএল ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ওয়াংখেড়েতে ১০০ ছক্কা মারেন হিটম্যান। ২৬ রানের ছোট্ট ইনিংসে তিনটি ছক্কা। যার সুবাদেই মুকুটে নয়া পালক। তবে আইপিএলে কোনও একটি স্টেডিয়ামে সর্বাধিক ছক্কার তালিকায় একনম্বরে বিরাট কোহলি (১৩০টি ছক্কা, চিন্নাস্বামী, বেঙ্গালুরু)।