Maynaguri | শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ শিশুকন্যা সহ দম্পতি

Maynaguri | শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ শিশুকন্যা সহ দম্পতি

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


বাণীব্রত চক্রবর্তী ও দীপঙ্কর বিশ্বাস, ময়নাগুড়ি : শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার পথে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল দেড় বছরের শিশুকন্যা সহ দম্পতি। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ময়নাগুড়ি ব্লকের আমগুড়ি এলাকায়। গত রবিবার সকাল দশটা নাগাদ দীপঙ্কর সরকার স্ত্রী মিতালি রায় সরকার ও তাঁদের দেড় বছর বয়সের শিশুকন্যা মাহিকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে মোটর সাইকেলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। সঙ্গে একটি টোটোতে তাঁদের জামাকাপড় সহ নয়টি ব্যাগ ছিল। মাঝপথে টোটো থেকে তাঁরা ব্যাগ নামিয়ে নেন বলে ওই টোটোচালকের দাবি। তারপর থেকে আর তাঁদের খোঁজ নেই। সোমবার রাতে ময়নাগুড়ি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি  করা হয় পরিবারের তরফে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ।

দীপঙ্করের বাড়ি আমগুড়ির ডাবুরিপাড়ায়। তাঁর শ্বশুরবাড়ি চার কিলোমিটার দূরে চাপগড় সড়কটারিতে। শ্যালিকা প্রিয়লতার বিয়ে উপলক্ষ্যে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে দীপঙ্কর গত ২ ফেব্রুয়ারি শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। ১০ ফেব্রুয়ারি প্রিয়লতার বিয়ে হয়। এই ক’দিন দীপঙ্কর সপরিবারে সেখানেই ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে ১৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে ব্যাগপত্র নিয়ে তিনজনে বাড়ি ডাবুরিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। তারপর থেকেই দীপঙ্কর এবং মিতালির মোবাইল ফোন বন্ধ। তাঁদেরও খোঁজ নেই।

শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার সময় গ্রামেরই টোটোচালক বিজয় রায়কে ফোন করে ডেকে নিয়েছিলেন দীপঙ্কর। নিজে মোটর সাইকেলে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে রওনা হন। রাত গড়িয়ে গেলেও তাঁরা বাড়ি না ফেরায় দীপঙ্কর ও মিতালির দুই পরিবারই চিন্তায় পড়ে।  টোটোচালক বিজয় মঙ্গলবার বলেন, ‘আমাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেওয়া হয়। মাঝপথে আমাকে সোজা ময়নাগুড়ি রোডে যাওয়ার কথা বলেন দীপঙ্কর। আমি ময়নাগুড়ি রোডেই ব্যাগগুলি নামিয়ে দিই। আমাকে একথা কাউকে বলতে নিষেধ করেছিলেন দীপঙ্কর।’

দীপঙ্কর এবং মালিনীর বাড়িতে কথাবার্তা বলে বোঝা গিয়েছে তাঁদের সঙ্গে কারও বিবাদ বা মনোমালিন্য হয়নি। তবে কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা বুঝতে পারছেন না দুই পরিবারের সদস্যরা। দীপঙ্কর ঘরকন্নার সামগ্রী সরবরাহকারী সংস্থার ঋণের টাকা সংগ্রহের কাজ করতেন। এছাড়াও এক মাস আগে ব্যাংক থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন।

তাঁর বাবা বিজয় সরকার এদিন বলেন, ‘ব্যাংক ঋণের সাপ্তাহিক ৭০০ টাকার কয়েকটি কিস্তিও দিয়েছে দীপঙ্কর। এছাড়াও দীপঙ্কর তার নিজের, স্ত্রী ও মেয়ের গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত নথিও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছে।’ দীপঙ্করের মা মণিবালা সরকার বলেন, ‘গত শনিবার রাতে বৌমা ও নাতনির সঙ্গে ভিডিও কলে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে। কীভাবে এই ঘটনা ঘটে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না।’ দীপঙ্করের ঠাকুরদা অরুণোদয় সরকারের বয়স ৮৬ বছর। উঠোনে বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছেন তিনি। বলেন, ‘এমন ঘটনার কথা জীবনে আগে কখনও শুনিনি। অবাক হয়ে যাচ্ছি।’

বিয়ের আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই দীপঙ্করের শ্বশুরবাড়িতে আশঙ্কার ছায়া। দীপঙ্করের শ্যালক রবি রায় এই ঘটনায় হতবাক। সোমবার রাতে তিনিই দীপঙ্করের বাবা সহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ময়নাগুড়ি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। রবি বলেন, ‘আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।’ দীপঙ্করের শাশুড়ি অলকা রায় বলেন, ‘জামাই মেয়েকে নিয়ে খাওয়াদাওয়া করল। সঙ্গে টোটো ডেকে দেওয়া হয়। সমস্ত ব্যাগ টোটোতে চাপিয়ে ওরা তিনজন মোটর সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গেল। তারপর কী হল বুঝে উঠতে পারছি না।’ ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দীপঙ্কর কী ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কোন টোটোতে ব্যাগ নিয়ে ফেরা হচ্ছিল, সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *