রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: মাটিগাড়ায় (Matigara) মহকুমা পরিষদের উদ্যোগে নির্মীয়মাণ শিশু উদ্যানের কাজ শেষ হয়নি। অর্ধনির্মিত অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে সেটি। যা নিয়ে এলাকার মানুষ হতাশ। অভিযোগ, আগের বোর্ডের আমলে শুরু হওয়া এই কাজ বর্তমান বোর্ড আসার পরে স্থগিত করে দিয়েছে। ফলে শিশুদের খেলাধুলোর জন্য তৈরি হওয়া ওই অর্ধসমাপ্ত পার্কে এখন গোরু চরছে।
মহকুমা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তাপস সরকার বলেছেন, ‘আমরা বাকি কাজের জন্য পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে টাকা বরাদ্দ করে রেখেছিলাম। কিন্তু বর্তমান বোর্ড আসার পরে সেই কাজ আর করেনি। ফলে বৃহত্তর মাটিগাড়া এলাকার শিশু-কিশোরদের কিছুটা বিনোদনের ব্যবস্থা করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তা পূরণ হয়নি।’ মহকুমা পরিষদের বর্তমান সভাধিপতি অরুণ ঘোষের বক্তব্য, ‘এমন কোনও প্রকল্পের টাকা রাখা ছিল বলে আমার জানা নেই। খোঁজ নেব। অর্ধসমাপ্ত কোনও শিশু উদ্যান থাকলে সেটার কাজ যাতে দ্রুত করা যায় সেই চেষ্টা করছি।’
মাটিগাড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় শিশুদের বিনোদনের জন্য কোনও পার্ক বা শিশু উদ্যান নেই। সেই জন্য বিগত বাম বোর্ডের আমলে ২০১৯ সালে মহকুমা পরিষদের বোর্ড তুম্বাজোতে একটি শিশু উদ্যান তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে একটি সমবায় সমিতির হাতে এক বিঘার কিছুটা বেশি নীচু জমি ছিল। সেই জমিটি এই শিশু উদ্যানের জন্য ওই সমিতি মহকুমা পরিষদকে দান করে। বিনিময়ে তাঁরা শিশু উদ্যানের ভিতরে একটি কমিউনিটি হল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল।
জমিটি হাতে আসার পর মাটি ফেলে নীচু জমিটি ভরাট করা হয়। এরপর চারদিকে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে সামনে লোহার গেট বসানো হয়। এই খাতে প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে খরচ করে মহকুমা পরিষদ। দ্বিতীয় ধাপে পার্কের ভিতরে ছোটদের জন্য স্লিপার, দোলনা, জাম্পিং সহ অন্যান্য সরঞ্জাম বসানোর কথা ছিল। এছাড়া ভিতরে একটি কমিউনিটি হল এবং সামনে রাস্তা তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়। সব মিলিয়ে আরও ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব অর্থ এবং পূর্ত স্থায়ী সমিতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের পোর্টালে তোলা হয়। প্রাক্তন সভাধিপতির কথায়, এর পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন চলে আসায় ওই কাজ আর করা যায়নি। তবে, কেন্দ্রীয় পোর্টালে এই কাজের প্রস্তাব তোলা থাকায় সেটা বর্তমান বোর্ডও করতে পারত। কিন্তু তারা সেটা করেনি।
তুম্বাজোতে এই শিশু উদ্যান সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা প্রতাপ সমাদ্দার, বলেন, ‘এখানে একটা শিশু উদ্যান হলে আমাদের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলোর সুযোগ পেত। এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেত। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে অর্ধেক কাজ হয়েই বন্ধ হয়ে গেল।’ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই শিশু উদ্যান হলে শুধু তুম্বাজোত নয়, পতিরাম, মাটিগাড়া বাজার সহ আশপাশের এলাকার সবাই উপকৃত হত।