মাথাভাঙ্গা: মাথাভাঙ্গা-১ ব্লকের পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বাইশগুড়ি গ্রামে মঙ্গলবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা করছিলেন বছর সত্তরের এক বৃদ্ধা। পরনে মলিন কাপড়। শরীরজুড়ে বার্ধক্য ও দারিদ্র্যের ছাপ স্পষ্ট। গ্রামবাসীরা তাঁকে সাধারণ ভিখারি মনে করছিলেন। কিন্তু এক বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় ফাঁস হল ওই মহিলার কীর্তি।
ওই বাড়ি থেকে ভিক্ষা নিয়ে বেরোনোর পর সেই বাড়ির একটি মোবাইল ফোন উধাওয়ের ঘটনা নজরে আসে। ঘটনায় সন্দেহ হওয়ায় ওই ভিখারি মহিলাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তাঁর ব্যাগে তল্লাশি চালাতেই বেরিয়ে আসে তিন-তিনটি মোবাইল হ্যান্ডসেট। শুধু কি তাই, ওই মহিলার ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় মোবাইল ফোনের সিম খোলার পিন এবং চারটি সিম কার্ড। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাইশগুড়ি গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ওই মহিলাকে আটক করে মাথাভাঙ্গা থানায় খবর দেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে মাথাভাঙ্গা থানায় নিয়ে যায়। মাথাভাঙ্গা থানার আইসি হেমন্ত শর্মা বৃদ্ধা ওই মহিলার নাম না জানিয়ে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি সুকটাবাড়িতে।’ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা অবধি মাথাভাঙ্গা থানায় এ ব্যাপারে কেনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। আইসি জানান, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। লিখিত অভিযোগ পেলে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হবে।
বাইশগুড়ি গ্রামের পঞ্চানন মোড় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ইমরান হোসেনের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে এক বৃদ্ধা তাঁর জেঠিমার বাড়িতে সবার নজর এড়িয়ে ঘরে ঢুকে মোবাইল হ্যান্ডসেট চুরি করে। জেঠিমা তাঁকে ঘর থেকে বের হতে দেখেন। জিজ্ঞাসা করায় তিনি ঘরে ঢোকার কথা বেমালুম অস্বীকার করেন। ওই বৃদ্ধা চলে যাওযার পর জেঠিমা ঘরে ঢুকে দেখেন মোবাইল নেই।
ইমরান বলেন, ‘জেঠিমা বিষয়টি জানানোর পর ওই বৃদ্ধাকে ধরে ধমক দিলে তিনি মোবাইলটি বের করে দেন। সন্দেহ হওয়ায় তাঁর ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে আরও দুটি মোবাইল হ্যান্ডসেট, মোবাইলের সিম বের করার পিন, কয়েকটি সিম উদ্ধার হয়।’ খবর চাউর হতেই এলাকাবাসী ভিড় জমায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে মাথাভাঙ্গা থানার পুলিশ। পরে ওই বৃদ্ধাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কল্যাণী রায় বলেন, ‘ওই বৃদ্ধা ভিখারির পিছনে নিশ্চয়ই মোবাইল চুরিচক্র রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করলে সঠিক তথ্য উঠে আসবে।’