চালসা: বর্তমান সময়ে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা দিনের পর দিন কমছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ঠিক উলটো ছবি মাটিয়ালী (Matelli) ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (Kalabari Main Faculty)। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে পাঁচটি শ্রেণি মিলিয়ে মোট ১৮৯ জন পড়ুয়া রয়েছে। এর আগে বিদ্যালয়টি ২০১৫ সালে নির্মল বিদ্যালয় ও ২০১৭ সালে শিশুমিত্র পুরস্কার পেয়েছে। আগামীতে যামিনী রায় পুরস্কার পাওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
একটি অত্যাধুনিক বিদ্যালয়ে যেসব থাকা উচিত তার প্রায় সবটাই রয়েছে এখানে। প্রয়োজনীয় স্মার্ট ক্লাস, সাংস্কৃতিক কক্ষ, লাইব্রেরী ও পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাওয়ার ডাইনিং হলও রয়েছে বিদ্যালয়ে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের কাছে বিদ্যালয়কে আরও আকর্ষণীয় করতে গড়ে তোলা হয়েছে ফুলবাগান। শ্রেণিকক্ষের দেওয়ালজুড়ে লেখা রয়েছে বিভিন্ন মনীষীর বাণী। এর বেশিরভাগটাই করা হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৭ জন স্থায়ী শিক্ষক ও একজন পার্শ্বশিক্ষক রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেওয়া অর্থ থেকেই বিদ্যালয়ে একটি তহবিল করা হয়েছে। সেই অর্থ দিয়েই বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করা হয়।
কিন্তু পুরস্কারপ্রাপ্ত এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে পানীয় জল সহ নানান সমস্যাও রয়েছে। ২০১৮ সালে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ থেকে বিদ্যালয়ে সোলার সিস্টেমের পানীয় জল প্রকল্পের কাজ করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে সেটি বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে মিড ডে মিলের রান্না সহ পড়ুয়াদের শৌচালয়ে। বর্তমানে কুয়োর জল দিয়েই মিড ডে মিল রান্না সহ যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া শ্রেণিকক্ষেরও কিছু সংস্কারের প্রয়োজন। যাবতীয় সমস্যার কথা বিদ্যালয়ের তরফে ব্লক প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। তবে সমস্ত বাধা অতিক্রম করে আগামীতে বিদ্যালয়টি যামিনী রায় পুরস্কার পাবে বলে আশাবাদী শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন বানিয়া বলেন, ‘আগামীতে যামিনী রায় পুরস্কারের জন্য আমরা এগিয়ে চলেছি। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাই সম্মিলিতভাবে কাজ করি। বিদ্যালয়ের জল সমস্যার কথা ইতিমধ্যেই লিখিতভাবে গ্রাম পঞ্চায়েত সহ ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তাজমিনারা বেগম বলেন, ‘বিদ্যালয়ে জলের সমস্যার বিষয়টি শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’ মেটেলির অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিজয় চন্দ্র রায় বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই উদ্যোগের জন্য তাঁদের সাধুবাদ জানাই।’