উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভায় ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যেই বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বা কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য কোনও মন্ত্রী যদি গুরুতর ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে ৩০ দিন জেলে থাকেন তাহলে তিনি পদ থেকে অপসারিত হবেন। এই বিলকে সংবিধান বিরোধী বলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বিরোধীরা। ঠিক একই ভাবে এই বিলের প্রতিবাদে সোচ্চার হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি জানান, এই বিল এনে হিটলারি কায়দায় গণতন্ত্রের উপর আঘাত হানতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিলের মাধ্যমে আদতে আদালত-বিচারব্যবস্থার ক্ষমতাই কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এদিন এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লেখেন, ‘আজ ভারত সরকার কর্তৃক পেশ করা ১৩০ তম সাংবিধানিক সংশোধনী বিলের নিন্দা জানাই। আমি এটিকে অতি জরুরি অবস্থার চেয়েও বেশি কিছুর দিকে একটি পদক্ষেপ হিসেবে মনে করি, এটি ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে চিরতরে শেষ করার একটি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ ভারতে গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর জন্য মৃত্যুসংকেত।’
I condemn the a hundred and thirtieth Constitutional Modification Invoice, proposed to be tabled, by the Authorities of India at this time. I condemn it as a step in the direction of one thing that’s greater than a super- Emergency, a step to finish the democratic period of India for ever. This draconian step comes as a loss of life… pic.twitter.com/Vx78R1fh6V
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 20, 2025
মমতা লিখেছেন, ‘সাধারণ মানুষের দেওয়া ভোটে সরকার তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়াকেই তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। অনির্দিষ্ট ক্ষমতা তুলে দেওয়া হচ্ছে ইডি-সিবিআইয়ের হাতে, যাদের সুপ্রিম কোর্ট খাঁচাবন্দি তোতা বলেছিল। সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেই ধসিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতেই যাবতীয় ক্ষমতা তুলে দেওয়া হচ্ছে।’ এরপরই মমতা গণতন্ত্রকে বাঁচানোর আহ্বান জানান, তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র, আদালতের ক্ষমতা কেড়ে নিলে মানুষ ক্ষমা করবে না।’
সম্প্রতি ইডি ও সিবিআইয়ের হাতে মুখ্যমন্ত্রী পদে থেকেও গ্রেপ্তার হয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। জেলে বসেই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। এছাড়াও ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন পদত্যাগ করার পরই গ্রেপ্তার হন। পশ্চিমবঙ্গেও মন্ত্রীপদে থাকাকালীন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা। জোতিপ্রিয় জামিনে মুক্ত হলেও পার্থ এখনও জেলে। যদিও পার্থকে সঙ্গে সঙ্গেই মন্ত্রীপদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয়কে সাড়ে তিন মাস মন্ত্রী রেখে দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেই সময় গ্রেপ্তার হলে অভিযুক্ত মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের সরানোর কোনও আইন ছিল না। এবার সেই আইনই আনতে চলেছে কেন্দ্র। যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধীরা।