মালদা: ঐক্যের মঞ্চে তর্কাতর্কি। বর্ষীয়ান বিধায়কের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা জেলা তৃণমূল মুখপাত্রের। বিধায়কের সঙ্গে আঙুল উঁচিয়ে বাদানুবাদে জড়ানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল মুখপাত্রের বিরুদ্ধে। এমন ছবি সামনে আসতেই অস্বস্তিতে তৃণমূল (TMC)।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল যুব’র তরফে মালদা কলেজ (Malda School) অডিটোরিয়ামে একুশে জুলাই উপলক্ষ্যে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। তৃণমূল যুব’র সভাপতি পরিবর্তনের পর এটাই ছিল জেলায় প্রথম বড় কর্মসূচি। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা-কর্মীরা ভিড় জমান অডিটোরিয়ামে। যুব’র কর্মসূচি হলেও জেলার সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্বকে আহ্বান জানানো হয়। অডিটোরিয়ামে যুবকর্মীদের উন্মাদনা এবং মঞ্চে সকলের উপস্থিতি দেখে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা তৃণমূলের একতা নিয়ে বড়াই করেন রহিম বকশি। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তাল কাটল। মঞ্চে তখন বক্তব্য রাখছেন কৃষ্ণেন্দু। হঠাৎই জেলা তৃণমূল মুখপাত্র আশিস কুন্ডুকে আঙুল উঁচিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় বর্ষীয়ান বিধায়ক তথা রাজ্য তৃণমূলের সহ সভাপতি সমর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পালটা আঙুল উঁচিয়ে আশিসকে আঙুল নামানোর কথা বলেন সমর। দু’জনকেই শান্ত করার চেষ্টা করেন পাশে থাকা নেতারা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে বর্ষীয়ান বিধায়কের সঙ্গে কেন এই ধরনের আচরণ। কি কারণে বিবাদের সূত্রপাত।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, মালদার (Malda Information) রতুয়ার টিকিট নিয়ে এই দ্বন্দ্ব। কারণ তর্কাতর্কির কিছুক্ষণ পর মঞ্চে বক্তব্য রাখেন রতুয়ার বিধায়ক। নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এই দলে কে টিকিট পাবে তা ঠিক করবেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকেই ভাবছেন, বয়সের কারণে সমর মুখোপাধ্যায় টিকিট পাবেন না। তাই রতুয়ায় গিয়ে টিকিট পেয়ে যাবে।’ প্রশ্ন উঠছে তবে কি সমরের গড়ে নিজের জমি তৈরি করার চেষ্টা করছেন ইংরেজবাজারের প্রাক্তন কাউন্সিলার। যদিও এই নিয়ে দু’জনের কেউই মুখ খোলেননি। মন্তব্য করতে চাননি জেলা সভাপতিও।
অন্যদিকে, এদিন মঞ্চ থেকে নবনির্বাচিত যুব সভাপতি প্রসেনজিৎ দাসের ভুয়সী প্রশংসা করে বিদায়ী যুব সভাপতি বিশ্বজিৎ মন্ডলকে কটাক্ষ করেন মানিকচকের বিধায়ক। যদিও সাবিত্রী এবং বিশ্বজিৎ মঞ্চে আবার পাশাপাশিই বসেছিলেন। জেলা তৃণমূল যুবর সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘যেটা হয়েছে কাম্য নয়। উনি সম্মানীয় এবং বর্ষীয়ান নেতা। রাজ্য নেতৃত্ব এবং জেলা সভাপতি বাকি বিষয়টা দেখবে।’ জেলা তৃণমূলের আরেক নেতা শুভময় বসুর বক্তব্য, ‘আমি সঠিক লক্ষ্য করিনি কি হয়েছে। তবে সমর মুখোপাধ্যায়কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত সম্মান করেন। তাই যেটাই হয়েছে ঠিক নয়।’
মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, ‘আমার মনোযোগ মিটিংয়ে ছিল। আমি ঠিক শুনিনি। আর প্রসেনজিৎ দাসকে যুব সভাপতি করে দল সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ দ্বন্দ্ব নিয়ে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ির কটাক্ষ, ‘রাজ্য থেকে বুথ স্তর। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি।’