মালদা: এখনই জোট নিয়ে ভাবনা নয়। বরং লোকসভা ভোটের ফলে নজর রেখে ’২৬-এর বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে অভ্যন্তরীণ শক্তিবৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে কংগ্রেস। সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধিতে সচেষ্ট সিপিএম জোট নিয়ে আশাবাদী হলেও সম্মানজনক আসন সমঝোতার পক্ষে। বাম শরিকরা তাকিয়ে মূলত সিপিএমের দিকেই। এমন পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বাম-কংগ্রেস জোটের এগিয়ে থাকা ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। জোট হলে বিধানসভা ভোটের সমীকরণ পালটে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
মুর্শিদাবাদ মুখ ফেরালেও, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসেই কিছুটা আস্থা রেখেছে মালদা। বাম সমর্থনে মালদার দুটি আসনে লড়াই করে কংগ্রেস দখলে রাখতে সমর্থ হয় দক্ষিণ মালদা। লোকসভায় পা রাখেন ইশা খান চৌধুরী। অন্যদিকে, উত্তর মালদায় হেরে গেলেও চারটি বিধানসভায় ভালো ফল করে কংগ্রেস। বঙ্গের বিধানসভায় কংগ্রেসকে খাতা খুলতে হলে প্রদেশ কংগ্রেসের ভরসার জমি মালদা। যে কারণে কোতোয়ালি ভবনের লক্ষ্য নিজেদের ক্ষয়িষ্ণু সংগঠন মেরামত করা। সূত্রের খবর, এই মেরামতির লক্ষ্যে দলের অন্দরে বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজ হচ্ছে। ব্লক স্তরের পর অঞ্চলের সাংগঠনিক স্তরেও নজর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ভাঙন সহ জেলার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে নেতৃত্ব। সম্প্রতি এমন কয়েকটি ইস্যুতে জেলা শাসকের কার্যালয় অভিযান কর্মসূচি নিয়েছিল কংগ্রেস। কর্মীদের উপস্থিতি আশা জুগিয়েছে নেতৃত্বকে।
লোকসভার ফলাফল বিশ্লেষণ করলে এগিয়ে থাকা ছয়টি আসনের মধ্যে উত্তর মালদার চারটি বিধানসভায় জোটের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে জোট না হলে একা কারও পক্ষে জেতা যথেষ্ট কঠিন, বলা যায় অসম্ভব। সেক্ষেত্রে লাভ হবে তৃণমূলের। কারণ, ’২১-এ জিতেছিল রাজ্যের শাসকদল। বাম-কংগ্রেস জোট হলে লোকসভার অঙ্ক বদলানো তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্র হল, দক্ষিণ মালদার মোথাবাড়ি ও সুজাপুর এবং উত্তর মালদার রতুয়া, মালতীপুর, চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুর।
জানা গিয়েছে, সাংগঠনিক কাজ শেষের পর বিভিন্ন বিধানসভায় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে জোটের সিদ্ধান্ত হাইকমান্ডকে জানাবে কোতোয়ালি ভবন। তবে কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরী বলছেন, ‘জোটের বিষয় হাইকমান্ড দেখবে। আমরা নিজেদের সংগঠন বৃদ্ধি করছি। বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং তৃণমূলের অপশাসন মানুষের সামনে তুলে ধরছি।’ তৃণমূল এবং বিজেপিকে হারাতে জোট যে প্রয়োজন, তা অস্বীকার করছে না সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য জামিল ফিরদৌসের বক্তব্য, ‘তৃণমূল এবং বিজেপিকে আটকাতে শুধু কংগ্রেস কেন, যে কোনও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমরা জোট করতে পারি। আশা করি এটা সবাই বুঝবে। সঠিকভাবে আসন সমঝোতা হলে জোটের পক্ষে লাভ।’ ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্র বলেন, ‘আমরা আপাতত বুথ কমিটি গঠনে জোর দিয়েছি। হরিশ্চন্দ্রপুরে আমাদের ৮০ শতাংশ বুথে কমিটি গঠন হয়ে গিয়েছে। বাকিটা বামফ্রন্টের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। তারপর তো কংগ্রেস।’