পুরাতন মালদা: পুরাতন মালদা শহর এবং তার আশপাশে গ্রামগুলিতে বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। যার বেশিরভাগটাই ডোমেস্টিক। প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা গৃহস্থালির বা ডোমেস্টিক বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়ে পড়ে রয়েছে। বাকি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা কমার্সিয়াল খাতে বকেয়া। এই বিশাল অঙ্কের টাকা না পাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাটি এখন গভীর সংকটে পড়েছে, ঠিক যেন ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ দশা। গ্রাহকরা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে পরিষেবা দিতে হিমসিম খাবে বিদ্যুৎ দপ্তর বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বিদ্যুৎ দপ্তর জানিয়েছে, এই বিপুল পরিমাণ টাকা না পাওয়ার কারণে তাদের পক্ষে বিদ্যুতের খুঁটি, তার, ট্রান্সফর্মার মেরামত করা বা পুরোনো জিনিসপত্র বদলে নতুন বসানো খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। টাকা পরিশোধ না করতে পারলে দপ্তরের হাতে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম আসবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বিদ্যুৎ পরিষেবার উপর। এমনটাই জানিয়েছেন কর্মীরা।
বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা এখন এই বকেয়া বিল তোলার জন্য বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। পুরাতন মালদার মঙ্গলবাড়ি বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির স্টেশন ম্যানেজার গণেশ চৌধুরী বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ বিল বকেয়া সংক্রান্ত বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবে। তবে আমাদের কর্মীরা ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে বোঝাচ্ছেন যে, বিল জমা দেওয়াটা কতটা জরুরি। অনেকেই এখন বিল জমা দিতে এগিয়ে আসছেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, শহর থেকে শুরু করে গ্রাম, সবমিলিয়ে বকেয়ার পরিমাণটা এতটাই বেশি যে গোটা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ভীষণ কঠিন। আধিকারিকরা আরও জানিয়েছেন, বিদ্যুতের বিল ঠিক সময়ে জমা না পড়লে শুধু দপ্তরের ক্ষতি নয়, এর ফলে সামগ্রিকভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবাটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। বিদ্যুতের বিল বকেয়ার সঙ্গে পরিষেবার কী সম্পর্ক? দপ্তর আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ দপ্তর যখন পর্যাপ্ত টাকা পায় না, তখন তারা নতুন কোনও কিছু কিনতে পারে না বা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে পারে না। এর ফলে গরমকালে যখন বিদ্যুতের চাহিদা খুব বেড়ে যায়, তখন দপ্তর সবার চাহিদা মেটাতে পারে না। এর ফলস্বরূপ এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পানীয় জলের সমস্যা থেকে শুরু করে ছোট দোকানপাট বা ব্যবসার ক্ষতি পর্যন্ত হয়, কারণ বিদ্যুৎ না থাকলে তাঁদের ব্যবসা চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে।
এই অবস্থায় বিদ্যুৎ দপ্তর এবং সাধারণ মানুষ, উভয়কেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গ্রাহকদের উচিত, দ্রুত তাঁদের বকেয়া বিল মিটিয়ে দেওয়া, কারণ তাঁদের টাকাতেই বিদ্যুৎ দপ্তর পরিষেবা ঠিক রাখে। যদি সকলে তাঁদের বিল ঠিক সময়ে জমা দেন, তাহলে পুরাতন মালদার বিদ্যুৎ পরিষেবা আবার আগের মতো সচল হয়ে উঠবে এবং মানুষ ভালো পরিষেবা পাবেন বলে মনে করছেন অনেকে।