এম আনওয়ারউল হক, বৈষ্ণবনগর: কালিন্দী নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে গেল মালদার (Malda) গোবিন্দপুরের সাঁকো। ওই পথে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ভেসে যাওয়ায় জলবন্দি হয়ে পড়েছেন গোবিন্দপুর ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৩ হাজার বাসিন্দা। ফলে জেলার বাকি অংশে যাতায়াতে নৌকা ছাড়া গতি নেই। কিন্তু সেই নৌকা চলাচলও শুরু হয়নি।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এতে দুর্ভোগ পড়ুয়াদেরও। তাদের স্কুলগুলি সব নদীর ওপারে। আরাপুরজোতের পিএন হাইস্কুলের শিক্ষক দিব্যেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘৭০-৮০ জন ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন আসে নদীর ওপার থেকে। সেতু ভেঙে যাওয়ায় কেউ আসতে পারছে না।’ আরাপুরজোতের টিপজনী আহ্লদিনী ঘোষ গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা জয়শ্রী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বর্ষা এলে একই সমস্যা হয় প্রতিবার। অনেক প্রতিভাবান মেয়ে স্কুল ছেড়ে দেয় এই যাতায়াতের ভয়ে।’
প্রতিদিন গোবিন্দপুর থেকে শতাধিক ছাত্রছাত্রী এই সাঁকো পার হয়ে যেত। এখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উপস্থিতি কমে গিয়েছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও নদীর ওপারে একটি প্রাইমারি স্কুল ও একটি ইংরেজিমাধ্যম বিদ্যালয় আছে। যদিও প্রশাসনের কোনও নজর নেই। দীর্ঘদিনের পাকা সেতু নির্মাণের দাবি থাকলেও তাতে কর্ণপাত করেনি কেউ। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অভিষেক মণ্ডল জানালেন, এলাকার মানুষের টাকায় সেতু তৈরি হয়। সরকার কোনও সাহায্য করে না।
গোবিন্দপুর এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ রংমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, দিনমজুর কিংবা নির্মাণ শ্রমিক। সেতু ভেঙে যাওয়ায় তাঁদের রোজগারের ওপর প্রভাব পড়েছে। গোবিন্দপুরের বাসিন্দা অঞ্জনা মণ্ডল বলেন, ‘গরিবের কথা কেউ ভাবে না। রাজনীতি নিয়ে সবাই ব্যস্ত। আমরা মরলাম না বাঁচলাম, কেউ খবর রাখে না । শুধু ভোটের সময় বড় বড় কথা বলেন নেতারা। সব দলের নেতারা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।’ গোবিন্দপুর থেকে কোতুয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের আরাপুর গিয়ে তবে মালদা যেতে হয়। তাতে খরচও কম। কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ঘুরপথে নরহাট্টা হয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মালদা যেতে হচ্ছে। এরফলে সময় ও টাকা দুই বেশি লাগছে।