মালদা: স্কুলে আসেন না শিক্ষকরা। এলেও কাজ করতে চান না। তাই কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী বা তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প চালু করতে পারেনি বামনগোলা ব্লকের জগদলা হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। জেলা শিক্ষা দপ্তরের তরফে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও নানা ধরনের সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত ওই স্কুলের পড়ুয়ারা। অবশেষে স্কুলটির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে চলেছে জেলা শিক্ষা দপ্তর। শনিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে চিঠি দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকল্পগুলি চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক।
লিখিত ওই নির্দেশে শিক্ষা দপ্তরের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, এবার সরকারি প্রকল্প চালু না হলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হবে। শিক্ষা দপ্তরের এই কঠোর মনোভাবের কারণে আতঙ্কিত সহকারী শিক্ষকরা।
স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে ৬৪ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। আর শিক্ষকের সংখ্যা ২২। স্কুল পড়ুয়াদের জন্য রয়েছে রাজ্য সরকারের বেশ কয়েকটি প্রকল্প। কিন্তু অভিযোগ, বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও সমস্তরকম সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত পড়ুয়ারা। সম্প্রতি ওই স্কুল পরিদর্শনে যান সংশ্লিষ্ট এলাকার বিদ্যালয় পরিদর্শক সায়ন্তনী পোদ্দার। কিন্তু তিনি গিয়ে দেখতে পান স্কুলের কোনও পড়ুয়াই সরকারি প্রকল্পের সুযোগসুবিধা পায়নি। শুক্রবার বিদ্যালয় পরিদর্শক লিখিতভাবে পুরো ঘটনাটি জানিয়ে দেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছে। এরপরেই শনিবার কঠোর পদক্ষেপ করেন জেলা বিদ্যালয়ের পরিদর্শক বাণীব্রত দাস। একটি চিঠি পাঠিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের বক্তব্য, ‘চিঠি দিয়ে সব জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের কোনও ছাত্র যদি কোনও সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়, তবে শিক্ষা দপ্তর তা রেয়াত করবে না। নির্দেশ না মানলে এফআইআর করতে বাধ্য হব আমরা।’
যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে জগদলা হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অমিত হালদারের দাবি, ‘কোনও পড়ুয়া সরকারি প্রকল্প পায়নি এমন তথ্য সঠিক নয়। কন্যাশ্রী প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। স্কুলের কিছু স্টাফ তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পটি দেখছেন। হয়তো সার্ভারের কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে কাজ শুরু হয়েছে।’
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সঠিক সময় আসেন না। এলেও ক্লাস নেন না। উপরন্তু সরকারি প্রকল্প পাচ্ছে না পড়ুয়ারা। প্রধান শিক্ষককে বারবার বলার পরেও কোনও কাজ হয়নি। তাই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছিলেন তাঁরা। ইতিমধ্যে তদন্ত হয়ে গিয়েছে। পড়ুয়ারা যাতে সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত না হয় আর স্কুলে যেন পড়াশোনা ঠিকঠাক হয়, সেজন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর নজরদারি চালানো উচিত শিক্ষা দপ্তরের বলে দাবি করেছেন তাঁরা।