হরষিত সিংহ, মালদা : পরিবারে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা। এমন ঘরের ছেলে রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে রেকর্ড গড়ে সুযোগ করে নিয়েছে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায়। দশম শ্রেণির পড়ুয়া পলাশ মণ্ডলের এমন সাফল্যে খুশি মালদা শহরের বিভূতিভূষণ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। যথারীতি পলাশের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুহিনকুমার সরকার বলেন, ‘পলাশ খেলাধুলোর পাশাপাশি পড়াশোনাতেও ভালো। এর আগে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। তবে সাফল্য পায়নি। এবার রেকর্ড গড়ে নিজের ইভেন্টে প্রথম হয়েছে। সেই সুবাদে জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ করে নিয়েছে। স্কুলের পক্ষ থেকে আমরা পাশে আছি। জাতীয় স্তরে আরও ভালো ফল করবে আশাবাদী।’
মালদা শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পলাশ। বাবা গয়া মণ্ডল পেশায় সবজি বিক্রেতা। পলাশ ছাড়াও তার দুই দিদির পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছেন গয়া। ছেলের খেলাধুলোর প্রতি ঝোঁক থাকলেও, কোনও প্রশিক্ষণকেন্দ্রে দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাঁর। স্কুলের গেম টিচারের কাছেই পলাশের অ্যাথলেটিক্সের হাতেখড়ি। সেখান থেকেই স্কুল স্তর থেকে জেলা, এমনকি রাজ্য স্তরে সুযোগ করে নেওয়া। ৭৩তম রাজ্য অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচ হাজার মিটার হাঁটা প্রতিযোগিতায় সুযোগ পেয়ে বাজিমাৎ। কলকাতায় জুন মাসে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় রেকর্ড সহ স্বর্ণপদক দখল পলাশের। মালদা দলের প্রশিক্ষক অসিত পাল বলেন, ‘এই বিভাগে রাজ্যে এতদিন ২৫ মিনিট ছিল রেকর্ড। ওই রেকর্ড ভাঙতে পলাশ সময় নিয়েছে ২৪. ৪৭ মিনিট। রেকর্ডের সঙ্গে জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ করে নিয়েছে।’
জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা কবে এবং কোথায় হবে, এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কিন্তু স্বপ্ন পূরণে নিয়মিত অনুশীলন করে চলেছে আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পলাশ বলছে, ‘আর্থিক অনটন রয়েছে বাড়ির। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রেকর্ড সহ পাঁচ হাজার মিটার হাঁটা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে খুব ভালো লাগছে। জাতীয় স্তরে সুযোগ পেয়েছি। তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি।’